‘খালেদা জিয়া আমাদের আঘাত দিতে ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করত’ দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ১১:৩৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২৩ অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন নয়, তারপরও জন্মদিন হিসেবে কেক কেটে আনন্দ উল্লাস করত। যেদিন আমাদের চোখের পানি পড়ে, মিথ্যা জন্মদিন বানিয়ে সেদিন সে উৎসব করত। শুধুমাত্র আমাদের আঘাত দেওয়ার জন্য এটা করত। বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন-গৃহহীনদের মাঝে জমিসহ ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্ট আমি এবং আমার ছোট বোন রেহানা বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। ছয় বছর দেশে আসতে পারিনি। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশের আরেক মীরজাফর খুনি মোস্তাককে দিয়েই জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি এরশাদও জিয়ার পথ ধরে ক্ষমতা দখল করেছিল।’ আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের জন্য কাজ করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটা বিরোধী দল আছে- মানুষ খুন করা, অগ্নিসন্ত্রাস করা, বাসে আগুন দেওয়া, রেলে আগুন দেওয়া, পুলিশকে মারা, মানুষকে হত্যা করা- এ ধরনের কাজই তারা করে যায়। ‘৭৫-এ জাতির পিতা হত্যা করার পর বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রতি রাতে কারফিউ থাকত, মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না। কোনোকিছু বললেই ধরে নিয়ে গুম করা হতো। লাশও গুম করত। সেই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সমমনা দল নিয়ে আমরা দিনের পর দিন আন্দোলন করেছি। মানুষ আজ ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করেছে। দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক অধিকারকে বিশ্বাস করে। মানুষের ভোটের অধিকার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দেশে একটা স্থিতিশীল অবস্থা রয়েছে। শত বাধা অতিক্রম করে, একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ, সবগুলো মোকাবিলা করে জনগণের আর্থসমাজিক উন্নয়নের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। দারিদ্র্যের হার অর্ধেকের বেশি নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ২৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। ইনশাল্লাহ এই দেশে আর হতদরিদ্র থাকবে না। আমি শুধু এইটুকু বলব, একটানা সরকারে আছি বলেই আজকে ভূমিহীন মানুষের ঘর করে দেওয়া থেকে শুরু করে, শিক্ষা দীক্ষা, শতভাগ বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, স্কুল-কলেজের উন্নয়ন করে দিচ্ছি। সরকারপ্রধান বলেন, অনেক বাধা অতিক্রম করে ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরি তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে আমাকে ঢুকতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। যে বাড়িতে আমার বাবা-মা, ভাইকে হত্যা করা হয়েছে সেখানে আমাকে দোয়া করতে দেয়নি। রাস্তায় বসেই দোয়া করেছি। বাড়িটি সিলগালা করা ছিল। এমনকি বাড়িটি নিলামে তোলা হয়েছিল। ধৈর্য ধরেছি। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করছি। মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আজকে আমি আনন্দিত যে, আমরা এ পর্যন্ত ৩৩৪ উপজেলাকে ভূমিহীনমুক্ত করতে পেরেছি। ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ, ৫৫ হাজার ৬১৭টি পরিবারকে ঘর দিতে পেরেছি। তিনি বলেন, সারা বাংলায় ঘুরছি। দেখেছি মানুষের কষ্ট। দুর্ভিক্ষ, মঙ্গা, ঝড়, বন্যায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ৯৭ সালে ঘুর্ণিঝড় হয়। তখন কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিনে দ্বীপে ৭০টি পরিবার পাই যাদের জমি ও ঘর ছিল না। সেন্টমার্টিনে আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের জমি এই ক্ষতিগ্রস্তদের দান করেন। সেখানে আমরা তাদের জন্য ঘর তৈরি করি। দুর্গম এলাকা হওয়ায় জায়গাগুলোতে যাওয়াও মুশকিল ছিল। নৌবাহিনী তাদের জন্য ঘর নির্মাণের দায়িত্ব নেয়। সেই থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের যাত্রা শুরু। শেখ হাসিনা বলেন, এরপর থেকে ঘরবাড়ি তৈরি করে দিয়ে এ দেশের মানুষের পুনর্বাসনে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। তাদের জীবন-জীবিকার পথ করে দিতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল এ দেশের একটা মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। অনুষ্ঠানে ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আরও ২২ হাজার ১০১টি পরিবারের মাঝে নতুন ঘর তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে এসব ঘর দেওয়া হলো। বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা এসব ঘর পরিবারগুলোর কাছে তুলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দেশের ১২৩টি উপজেলাকে সম্পূর্ণ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান। এর মধ্যে ১২টি জেলার সব উপজেলা ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হলো। ভিডিও কনফারেন্সে তিনটি আশ্রয়ণ প্রকল্প– খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত সোনার বাংলা পল্লি, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্ল্যাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। Share this:FacebookX Related posts: আমাদের সতর্ক থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ‘আমাদের যুদ্ধজাহাজ তৈরির চিন্তা করতে হবে’ আমাদের দেশে বনায়নে যেন সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টি হয় : প্রধানমন্ত্রী আমাদের উন্নয়ন মানেই ভারতের উন্নয়ন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর অপমানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুর অপমানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ‘বিদেশিরা আমাদের অনেক কিছু নিয়েই আপত্তি করে’ ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনচর্চা আমাদের মানবিক জীবনবোধ শেখায়’ ‘থার্টিফাস্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ’ নিখোঁজ হওয়ার দেড় বছর পর বাড়ি ফিরলেন র্যাব কর্মকর্তা করোনায় আরও ২২ জনের মৃত্যু ঢাকা মহানগর হেফাজতের সভাপতি গ্রেফতার SHARES Matched Content জাতীয় বিষয়: ‘খালেদা জিয়া১৫ আগস্টআঘাত দিতেআমাদেরপালন করত’মিথ্যা জন্মদিন