ভৈরবেরপল্লীতে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০

প্রকাশিত: ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ, মে ৮, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়েনের বাঁশগাড়ী গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে জামাই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে করে দুই পক্ষের আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন।

গত ৬ মে শনিবার রাতে গজারিয়া গ্রামের কাসেম মিয়া দলবল নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বাঁশগাড়ীগ্রামে গেলে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে বাকবিতা- এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।এসময় গজারিয়া গ্রামের মোস্তুফা মিয়ার ছেলে কাসেম (৩০), জালাল উদ্দিনের ছেলে মোরাদ(২৬) ও অহিদ মিয়ার ছেলে আনোয়ার (৩০) আহত হয়। রাতেই এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরতচিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

পরে কাসেমের অবস্থা অবনতি হলে তাকে উন্নতচিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করেন। ৭ মে রোববার এ ঘটনার জের ধরে দীর্ঘ ৪ঘণ্টা বাঁশগাড়ী ও গজারিয়া গ্রামবাসীদা, বল্লম, টেটা, ইটপাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায়আরো ২০ জনের মতো আহত হয়। এছাড়াও আরো অনেকেই আহত হয়েছে। খবর পেয়ে ভৈরব থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ৬ মে রাতে বাঁশগাড়ী গ্রামের শিশু মেম্বারের বাড়িরশহীদ ও রফিক মিয়ার জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। একই বংশের রফিক ও শহীদ মিয়ার চাচা তোতা মিয়ারমেয়ের জামাই গজারিয়া ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকার কাসেম তার শ্বশুর বাড়িতে দলবল নিয়েগিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। পরে শিশু মেম্বারের বাড়ির লোকজন জামাই কাসেম মিয়া ও তার দলবলেরউপর আক্রমণ করে গুরুতর আহত করে। এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেনিয়ে যায়। এ সময় কাসেম মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করাহয়।

এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পরদিন ৭ মে রোববার সকাল ১১টা থেকে উভয় পক্ষের লোকজনদেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক শিশু, নারী-পুরুষ,বৃদ্ধ আহত হয়। গুরুতর আহতরা হলেন, নজরুল (২২), বাবু (১৩), মোস্তফা (৩৮), সিরাজ (৪০), দানিস (২৫), কবির (৪৫), জাকারিয়া (৫০), ইয়া হিয়া (২১), ইমন (২২), রিনা(৪৫), চাঁন মিয়া (১৮), জিল্লু (৫৫), সাইজ উদ্দিন (৪০), রুবেলা (৩০), গিয়াস উদ্দিন (৭৬)।এদের মধ্যে কবির কাজী ও মোস্তুফা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শিশু মেম্বারের পক্ষে তার ছেলে জনি জানান, আমাদের বংশের রফিক মিয়াজমি নিয়ে দ্বন্দ্বে বাঁশগাড়ী গ্রাম থেকে তার আত্মীয়দের খবর দিলে তারা এসে আমাদের গ্রামেঝগড়া করে এসময় তারা আমাদের বাড়ির অনেক জায়গায় অগ্নিসংযোগ করেন এবং আমাদের বাড়িরভাংচুর করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদীসহ নগদ ১২ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

একই গ্রামের কৃষক ইসলাম উদ্দিন জানান, জমি নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব হয়েছে। কিন্তুতারা আমার ফসলি জমির ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্বে আমি ক্ষতিগ্রস্তহয়েছি। কাসেম মিয়ার পক্ষে তোফাজ্জল মিয়া জানান, রাতে আমি আমার বন্ধু কাসেম এরসাথে ওই এলাকায় গেলে শিশু মেম্বারের লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতেকাসেম গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনা কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

এ বিষয়ে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম শাহরিয়ার বলেন,বাঁশগাড়ী গ্রামে তাদের পারিবারিক ঝগড়া ছিল এতে করে অন্য গজারিয়া গ্রামে আত্মীয়রা এতেযুক্ত হলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, গজারিয়া ইউনিয়নে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছেখবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশমোতায়েন করা হয়েছে।