দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বিপজ্জনক দশকের মুখোমুখি বিশ্ব দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৩:২৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২২ অনলাইন ডেস্ক ; রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বিশ্ব সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক দশকের মুখোমুখি। বৃহস্পতিবার এক দীর্ঘ বক্তৃতায়, তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে ন্যায্যতা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। রাশিয়া এই পদক্ষেপের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মি. পুতিন বলেন, এই পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমানবিক ইস্যু তুলে ব্ল্যাকমেইল করছে এবং এভাবে তারা রাশিয়ার মিত্রদের মস্কোবিমুভ করতে চাইছে। পশ্চিমারা ক্রেমলিনের সাম্প্রতিক সময়ে দেয়া অস্পষ্ট পরমাণু হুমকির নিন্দা করেছে। এই সপ্তাহের শুরুর দিকে, নেটো সামরিক জোট রাশিয়ার করা একটি অসমর্থিত দাবির নিন্দা করেছে। রাশিয়া দাবি করেছিল যে ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে “ডার্টি বোমা” ব্যবহার করতে পারে – ডার্টি বোমা মূলত সাধারন বিস্ফোরকের সাথে তেজস্ক্রিয় উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা একটি বোমা। নেটো সদস্যরা “এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান” করেছে বলে জানান জোটটির মহাসচিব ইয়ানেস স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেন “উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে রাশিয়ার এই বিষয়টিকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করা মোটেও উচিত হবে না”। ইউক্রেনে রাশিয়ার সাম্প্রতিক কয়েকটি সামরিক পরাজয়ের পর প্রেসিডেন্ট পুতিন বার্ষিক ভালদাই ফোরামে কথা বলেন। রাশিয়ায় প্রায় তিন লাখ নাগরিকদের যুদ্ধে যোগ দিতে জড়ো করার ঘোষণার বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ বাড়ছে। মস্কোতে তার ভাষণের আগের দিন, তিনি নিয়মিত পারমাণবিক অনুশীলন তদারকি করেছেন যাতে শত্রুপক্ষের পারমাণবিক হামলার প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত থাকা যায়। “আমরা রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহার সম্পর্কে সরাসরি কিছুই বলিনি। আমরা শুধুমাত্র পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের নানা ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি,” তিনি বলেন। প্রেসিডেন্ট পুতিন যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আগস্টে একটি প্রচারণা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে লিজ ট্রাস বলেছিলেন যে তিনি পারমাণবিক হামলার বোতাম টিপতে প্রস্তুত থাকবেন যদি পরিস্থিতি তাকে এটি করতে বাধ্য করে। পুতিন বলেন, তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের মিত্ররা এই বক্তব্যের কোন আপত্তি করেনি: “আমাদের কী করার কথা ছিল? চুপ থাকা? ভান করা যে আমরা শুনিনি?” তিনি নিজেই বারবার সতর্ক করেছেন যে রাশিয়া নিজেদের রক্ষা করার জন্য “সব ধরণের উপায়” ব্যবহার করবে- তার এই বক্তব্যকে স্পষ্টভাবে পারমাণবিক হুমকি হিসাবে দেখা হয়েছে। তিনি পশ্চিমের উপর পুনরায় চড়াও হয়ে বলেন, এই পশ্চিমারা বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বতন্ত্রতাকে অস্বীকার করার বিপজ্জনক, রক্তাক্ত এবং নোংরা খেলায় মেতেছে। বিশ্বব্যাপী পশ্চিমের “অবিভক্ত আধিপত্য” এখন শেষ হয়ে আসছে বলে তিনি জোর দেন। “আমরা একটি ইতিহাসের প্রান্তে আছি। সামনে সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক, অপ্রত্যাশিত এবং একই সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দশক অপেক্ষা করছে।” পশ্চিমারা আর দায়িত্বে থাকতে পারছে না – তবে এর জন্য তারা “মরিয়া” হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন যে “আমাদের চোখের সামনে একটি ভবিষ্যৎ বিশ্ব-ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে”, এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমারা রাশিয়াকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে পুতিন তার দাবির সমর্থনে কোনও প্রমাণ দেখাননি। রাশিয়া বিষয়ক সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন বিশ্ব সম্পর্কে কি ধারণা পোষণ করেন সেটা তার বক্তব্যেই ফুটে উঠেছে। তার মতে, রাশিয়া হল খুব পবিত্র এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট পর্যন্ত সবকিছুর জন্য একমাত্র দায়ী পশ্চিমারা। আমরা এমন একজন ক্রেমলিন নেতাকে দেখেছি যিনি তার কৃতকর্মের জন্য একেবারেই অনুশোচনা করেননি – বা অন্ততপক্ষে তিনি এসব বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতেও প্রস্তুত নন। এবং তাই, ভ্লাদিমির পুতিন যা কিছু ঘটছে তার একটি সমান্তরাল বাস্তবতা আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য পশ্চিমাদের দায়ী করেছেন; তিনি জোর দিয়েছেন যে নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থা “আইন ও ন্যায়বিচার”-এর উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত – এই বক্তব্য এমন এক প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে এসেছে, যিনি আট মাস আগে, একটি সার্বভৌম, স্বাধীন জাতির উপর পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করেন। তিনি দাবি করেছেন যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভুলভাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এবং ফেব্রুয়ারি থেকে প্রেসিডেন্ট পুতিন এই সংঘাতে রাশিয়ার অস্ত্রাগারের প্রতিটি অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত থাকবেন বলে বেশ কয়েকটি ইঙ্গিত দিয়েছেন। আমার জন্য, সম্ভবত সবচেয়ে বলার মতো মন্তব্যটি হল, প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ ‘ক্ষতি’র মুখে পড়ায় ভোগান্তির কথা স্বীকার করেছেন। “আমি সর্বদা মানুষের জীবন হারানোর কথা ভাবি,” তিনি বলেন। কিন্তু তার পরপরই তিনি “রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে শক্তিশালী” করতে রাশিয়া যে “বিশাল সুবিধা” অর্জন করেছে সে বিষয়গুলো সামনে আনেন। অনুশোচনা বা অনুশোচনার কোনও ইঙ্গিতও নেই। কোনও ইউ-টার্নের চিহ্ন নেই। সূত্র: বিবিসি বাংলা। Share this:FacebookX Related posts: ট্রাম্প ফেসবুকের সবচেয়ে বড় সেলিব্রিটি ইতালিতে দুই সপ্তাহে সবচেয়ে কম মৃৃত্যু আজ ভারতে তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম সংক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হত্যাকারীর মৃত্যু চীনে ভাইরাসে ২৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৮৩০ খুব কষ্টের সময় আসছে জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা আফগানিস্তানে জাতিসংঘের গাড়িবহরে হামলা, নিহত ৫ বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে মিয়ানমারকে জাতিসংঘের চাপ জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে আহত শতাধিক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবদাহে অতিষ্ঠ কানাডায় ভয়াবহ দাবানল SHARES Matched Content আন্তর্জাতিক বিষয়: দশকেরদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবিপজ্জনকমুখোমুখি বিশ্বসবচেয়ে