বেহাল সংযোগ সড়কে হাজারো মানুষের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : গাজীপুরের শ্রীপুরে বেহাল ছোট ছোট সংযোগ সড়কে চরম দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে হাজারো মানুষের। বেশ কয়েক বছর ধরে সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা তৈরি হলেও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতিতে সড়কগুলোর সংস্কার হয়নি।
বছরের অন্যান্য সময় কষ্ট করে স্থানীয় লোকজন ও শিল্প কারখানার শ্রমিকরা চলাচল করলেও প্রতি বছর বর্ষায় কয়েকগুন বাড়ে দুর্ভোগ।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের এমসিবাজার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে হাজী ছোট কলিম স্কুল সড়কটি সংযুক্ত হয়েছে মাওনা-ধনুয়া সড়কে। এ সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। এর পাশেই রয়েছে সুফিয়া কটন মিলের পার্শ্ববর্তী রিয়াজ উদ্দিন মেম্বার সড়ক। এই সড়কটিও প্রায় ৮০০ মিটার।

এছাড়াও, এমসি বাজার থেকে এশিয়া কম্পোজিট সড়কের দৈর্ঘ্য এক কিলোমিটার। এ তিনটি সড়ক ব্যবহার করে আশপাশের ১৪টি শিল্প কারখানার লাখো শ্রমিক, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ। সড়কগুলো সংস্কারের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি দীর্ঘদিনেও। শত বছর ধরে এসব সড়ক ও সিএস রেকর্ডভুক্ত হলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তা এখনও আইডিভুক্ত করতে পারেনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রতি বছর আইডির অজুহাতে সংস্কার কাজে পিছুটান দেয় তারা।

হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সজল বলেন, তাদের বিদ্যালয়ে প্রবেশের মূল সড়ক এমসি বাজার থেকে এই সংযোগ সড়কটি। এই বিদ্যালয়ে দুই হাজার ২০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। সঙ্গে রয়েছে কলেজ ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ সড়ক দিয়ে শিল্প কারখানার ভারী যানবাহন চলাচল করে। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে এ সড়কটি। শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। কাদা পানি মাড়িয়ে তাদের বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে।

এই সড়কের পাশেই সুফিয়া কটন মিলস সংলগ্ন হাজী রিয়াজউদ্দিন মেম্বার সড়ক। বিকল্প হিসেবে এ সড়কটিও ব্যবহার হতো। কিছু দিন পূর্বে জেলা পরিষদের সহায়তায় ৪০০ মিটার উন্নয়ন হলেও বাকি অংশ বর্তমানে বেহাল।

স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ মিয়া বলেন, কয়েক বছর ধরে শুধু আবেদন করেই গেলাম সংস্কারের জন্য। একজন আরেকজনকে দেখায়। বর্তমানে মাত্র ৪০০ মিটার সড়ক বেহাল হয়ে পড়ায় এ সড়কে চলাচল করতে পারছে না সাধারণ লোকজন।

স্থানীয়রা বলেন, এ সড়কগুলো কেন্দ্র করে মাওনা ও মুলাইদ এলাকায় বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যেখানে কাজ করছে লক্ষাধিক শ্রমিক। সড়কগুলো বেহাল হয়ে থাকায় পণ্য পরিবহন ও শ্রমিকদের চলাচলেও দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

নোমান গ্রুপের নাইস ফ্রেব্রিকস কারখানার শ্রমিক আমেনা আক্তার বলেন, বৃষ্টি হলে হাতে জুতো নিয়ে রাস্তায় চলতে হয়। সারাদেশে এতো উন্নয়ন হচ্ছে, আর এখানকার রাস্তার দিকে তাকালে কতো মলিন লাগে। শিল্প এলাকায় কেন এতো অবহেলা বিষয়টি আমার ভাবনায় আসে না।

তামিশনা ফ্যাশন কারখানার শ্রমিক মতিউর রহমান বলেন, ছোট ছোট দুর্ভোগগুলো আজ বড় সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। গত আট বছর এই এলাকায় চাকরি করে দেখেছি, এই এলাকার প্রতি সবার যেন কেন অবহেলা। জনগণের দুর্ভোগের কথা ভেবে অন্তত এখন সরকারের লোকজনের নজর দেয়া প্রয়োজন।

মুলাইদ এলাকার আব্দুল আজিজ বলেন, অনেকে বুলি আওড়াচ্ছেন এতো উন্নয়ন হচ্ছে। কই মাওনা ও মুলাইদ এলাকায় তো কোন উন্নয়ন নেই। জনগণের দুর্ভোগ তো ভাবতে হবে তাদের। কেউই তো এসব ভাবছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী রাজিবুল আহসান বলেন, আপাতত সড়কগুলোর জরুরী সংস্কারের জন্য আমাদের কোন তহবিল নেই। তবে স্থায়ী সংস্কারের জন্য নির্দ্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয় যা বেশ কিছু সময়ের প্রয়োজন। এছাড়াও সুফিয়া কটন মিলস সড়কটি আইডিভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। আইডি হলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।