আরমানিটোলার আগুনে মৃত্যু বেড়ে ৪, আহত ২১

প্রকাশিত: ১:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বাবুবাজার ব্রিজের পাশে আরমানিটোলায় ছয়তলা হাজী মুসা ম্যানসন ভবনের রাসায়নিকের গুদামে আগুন লাগার ঘটনায় আরও দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আগুন নেভানোর পর ভবনটির ছয় তলার চিলেকোঠা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাঁড়িয়েছে।

এতে আহত হয়েছেন আরো ২১ জন। ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উদ্ধার ও তল্লাশী এখনো চলছে। সম্পন্ন হলে পুরো ভবন সিলগালা করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে দায়িত্বপালনরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

শুক্রবার সেহরির সময় রাত ৩টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

নিহতরা হলেন- কবির, মার্কেটের প্রহরী রাসেল, রাসেলের ফুপা আরেক প্রহরী ওয়ালিউল্লাহ বেপারী (৭০) ও চতুর্থ তলার বাসিন্দা ইডেন মহিলা কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া। নিহতদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি চাঁদপুরে।

কবির ওই ভবনের চিলেকোঠায় থেকে কাগজের বান্ডল বাধার কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন তার ভাতিজা সাইফুল। আহতদের মধ্যে ২ জন শিশু, ৫ নারী, ১৫ জন পুরুষ। কেউ আশঙ্কামুক্ত নয় বলেছেন চিকিৎসক সামন্তলাল সেন।

বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন ফকির জানান, আগুনের ঘটনায় ভবন থেকে একজনের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে অন্তত ২১ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে চারজনকে ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ও বাকিদের সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ভোরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, আরমানিটোলার আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দ হয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে বাসিন্দারা আটকে পড়েন। ভবনটিতে ১৮টি পরিবার বসবাস করে। অতিরিক্ত ধোঁয়ার কারণে প্রথমে আশপাশের ভবন থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। আটকে পড়া অনেককেই মুমূর্ষু অবস্থায় গ্রিল কেটে, জানালা ভেঙে, ছাদের দরজা ভেঙে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান জানান, এখনো উদ্ধার কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে আগুনের কারণ জানা যায়নি। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তিনি আরা বলেন, এটি অপরিকল্পিত কেমিকেল মার্কেট। এ ভবনে আমরা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে পাইনি। এ ঘটনায় আমাদের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন।