খাগড়াছড়িতে থামছেইনা অবৈধ পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ১১:৪৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২২, ২০২১

আব্দুর রহিম, খাগড়াছড়ি: পার্বত্য খাগড়াছড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কাটা দিনকে দিন বৃদ্ধি বেড়েই চলেছে। পাহাড় ও ফসলি জমির উর্বর স্তর কেটে ইট ভাটার ইট পুড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসকল অবৈধ কাজে জড়িয়ে রয়েছেন কিছু নেতা ও প্রশাসনের লোকজন।

খাগড়াছড়ির জেলার মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, লক্ষীছড়ি, পানছড়ি, দিঘিনালা, গুইমারার তৈকর্মা, চিংড়িপাড়া, বাইল্যাছড়িতে অবৈধ ভাবে খাল থেকে লক্ষ লক্ষ ফুট বালু উত্তোলন ও নির্বিচারে পাহাড় কেটে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছে উপজেলার একটি সিন্ডিকেট।

খাগড়াছড়িতে বালু উত্তোলনের সাথে রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে পাহাড় কাটা ও খাল গুলো থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতেই তারা খান্ত নয়, কেটে নিচ্ছে খালের দুই পাড় ১৫০-২০০ ফুট। এতে এক দিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, অন্যদিকে বর্ষার ভরা মৌসুমে খালের ভাঙ্গন আগ্রাসী রুপ ধারণ করে বিপজ্জনক হয়ে উঠে খাল পাড়ে বসবাসরত ছিন্নমূল মানুষ গুলোর জন্য।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাইল্যাছড়ি, চিংড়িপাড়া, তৈকর্মা এলাকায় আবহমান পাহাড় ও খাল থেকে কিছু দুষ্ট চক্র লোকেরা দিনের পর দিন এমন অপরাধ করে গেলেও প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে তারা।

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বর্ষা মৌসুমে খালের দু’ধার ভেঙ্গে ফসলি জমি গুলো খালের গর্ভে পতিত হয়। বিগত কয়েক বছরে প্রায় দুইশত একর জমি খালের ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে।

স্থানীয় এক কৃষক বলেন, বালু খেকোদের এমন আগ্রাসী কান্ডে আমরা খালপাড়ে বসবাসরত কৃষকরা ভয় ও উৎকন্ঠায় থাকি। কারণ একদিকে আমাদের বসত বাড়ি যেমন ঝুকির মধ্যে রয়েছে তেমনি ফসলের জমি গুলো খালের ভাঙ্গনে বর্ষায় হারিয়ে যাবে। তাছাড়া ১৫০-২০০ ফুট খাল পাহাড় গুলো কেটে মাটি নেওয়া পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত পরিবার গুলোর যেকোনো সময় পাহাড় ধ্বসে ব্যাপক প্রানহানি ঘটতে পারে। হতে পারে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তারা আরো বলেন,পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধে বারবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন সহযোগিতা পাইনি।

জানা যায়, গুইমার উপজেলার বাইল্যাছড়ি এলাকার হেডম্যান পাড়ার ব্রিকফিল্ড ছাড়াও বাইল্যাছড়ি ছড়াসহ আশেপাশের সকল খাল থেকে দিনের পর দিন বিরামহীন ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তৈকর্মা এলাকায় মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে ট্রাকে ট্রাকে পাচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও কোন প্রায়জনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এই ব্যাপারে ড্রাম ট্রাকে স্কাভেটর ড্রেজার মেশিনের পরিচালনাকারী এক ব্যক্তি জানান, আমার দুইটি স্কাভেটর ড্রাম ট্রাকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটছি ব্রিকফিল্ডের কাজের জন্য।
সচেতন মহল মনে করেন এই ভাবে ফসলি জমির মাটি অবৈধ ইটভাটার মালিকেরা কেটে নিয়ে গেলে ফসল ফলানোর কাজ বিঘ্নিত হবে এবং এলাকার ফসল উৎপাদন ব্যাঘাত ঘটবে।

জেলার নয়টি উপজেলার ইটভাটার প্রতিদিন স্কাভেটর, ড্রাম ট্র্রাক দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার গাড়ি করে। অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন রোধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী ।