ডাকাতি ঠেকাতে ৭ গ্রামের মানুষের রাত জেগে পাহারা

প্রকাশিত: ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ডাকাতি, চুরি ঠেকাতে ৭ গ্রামের মানুষ লাঠিসোটা হাতে নিয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মহজমপুর, বশিরগাঁও, উত্তর কাজিপাড়া, সেকেরহাট, চরতালিমাবাদ, দড়িকান্দি, রাজাপুর গ্রামবাসী ডাকাতি, চুরি ঠেকাতে পাহারা দিচ্ছেন।

গত কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় ডাকাতের আনাগোনা বেড়ে গেছে। মহজমপুর গ্রামে এক বাড়িতে ডাকাতির ঘটনাও ঘটে। এতে করে ওই এলাকায় ডাকাত ও চোর আতংক বেড়ে যায়। ফলে রাত জেগে লাঠিসোটা নিয়ে পাহাড়া দিচ্ছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ষা মৌসুম এলেই এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আতংক বেড়ে যায়। নদী ঘেঁষে গ্রাম হওয়ার কারনে ডাকাতরা বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিয়ে নগদ টাকা, স্বর্ণলংকার লুট করে নিয়ে যায়। টাকা পয়সা না পেলে কুপিয়ে আহত করে ডাকাতরা। এলাকার মানুষ প্রতিদিন রাতে ১৫-২০ জনের দল তৈরি করে লাঠিসোটা নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। মাঝে মধ্যে ডাকাতদের সতর্ক করতে উচ্চ শব্দে খবরদার বলে ডাক চিৎকার দেয়।

এলাকাবাসীর আরো অভিযোগ, করোনাকালীন সময়ে ডাকাত ও চোরের উপদ্রপের পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। মহজমপুর গ্রামের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে মাদক কেনা বা সেবনের জন্য এ এলাকায় দিনের বেলায় বহিরাদের প্রবেশ বেড়ে গেছে। গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে গত ১৯ শে জুন শুক্রবার মহজমপুর বাজারে মো. শহীদুল্লাহ সরকারের সভাপতিত্বে মাদক, চুরি ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সভা করেন। সভার পর ২৭ জুন সিরাজুল হকের ছেলে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলামকে ইয়াবা বিক্রির সময় গ্রামবাসী ৪৮ পিছ ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশে দেয়। এসময় তার সহযোগী মো. সফর পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

এলাকবাসীর দাবী, মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূল করা না গেলে এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের কাছে গ্রামবাসীর দাবি এই কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

মহজমপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ জানান, দিনের বেলায় মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকা এসে দেখি গিয়ে রাতের বেলায় ডাকাতি করতে আসে। মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূল করতে না পারলে এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডাকাতি ও চুরি ঠেকাতে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বশিরগাঁও গ্রামের মনির হোসেন বলেন, প্রতিদিনই ডাকাতরা এ এলাকায় হানা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সুযোগ বুঝে টার্গেট করা বাড়িতে ডাকাতি করে থাকে। এলাকাবাসী ডাকাতি ও চুরি প্রতিরোধে প্রতিদিন পাহারা দিয়ে থাকেন।

তালতলা ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ মো. আহসানউল্লাহ জানান, চুরি, ডাকাতি ঠেকাতে পুলিশের পাশাপাশি গ্রামবাসী পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। এতে করে ডাকাতি ও চুরি ঠেকানো সম্ভব হবে বলে আশা করি। তবে দিনের বেলায় বহিরাগত ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।