গৌরীপুরে ১৬ বছরেও হয়নি আ.লীগ সম্মেলন, উৎসব-উল্লাসে ভাটা!

প্রকাশিত: ৬:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯

নিউজ ডেস্কঃ ষোল বছর পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠে ময়মনসিংহের গৌরীপুর। সড়ক, মহাসড়ক-হাটবাজারে রঙিন তোরণ, ফেনা-ফেস্টুন আর ব্যানারে প্রার্থীরাও ছিলেন সরব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও বাদ যায়নি, প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকদের ব্যানারে সেখানেও চলে প্রচারণা।২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে মেয়াদ উর্ত্তীণ সকল কমিটির কাউন্সিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন নির্দেশ বাস্তবায়নে শুরু হয় তোড়জোড়।পকেট কমিটি হয়ে যেতে পারে এমন আশংকায় সম্মেলন চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক। ১৮ অক্টোবর গৌরীপুর প্রেসক্লাবে ‘আহ্বায়ক কমিটি নয়, সম্মেলন চাই’ দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গৌরীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুকনুজ্জামান পল্লব।

পঞ্চগড়ে রেলপথ মন্ত্রীর সহধর্মীনি নিলুফা জাহানের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ডৌহাখলার সভাপতি মো. কাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক সরকার, মাওহার সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ কালন, রামগোপালপুরের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম মাস্টার, সহনাটীর সভাপতি রুহিদাস আচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার, বোকাইনগরের সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম, অচিন্তপুরের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম অন্তর প্রমূখ।এ দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গৌরীপুর উপজেলা শাখার সম্মেলন করার লক্ষে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তানুযায়ী ৯ নভেম্বর উপজেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. হেলাল উদ্দিন আহাম্মেদকে আহ্বায়ক ও জেলা কমিটির সদস্য এ.কে.এম আবদুর রফিককে সদস্য সচিব করে প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করেন।

এ ঘোষণার পরপরেই উজ্জীবিত হয়ে উঠেন দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক। রাস্তাগুলো হয়ে উঠে রঙিন, প্রার্থীর ফেনা-ফেস্টুন আর তোরণে সুসজ্জিত হয় সড়ক-মহাসড়ক। চায়ের স্টলে, রাজনীতির মাঠে শুরু হয় প্রধান আলোচ্য বিষয়; কে হচ্ছেন সভাপতি ও সম্পাদক?প্রার্থীরাও ছুটে চলেন কেন্দ্রীয়, জেলা-উপজেলা ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিকট। গৌরীপুরের হাতেম আলী সড়কস্থ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুন্নাফের অফিস ঘরটি নেতাকর্মীদের পদচারণামুখর হয়ে উঠে। এমপি’র অস্থায়ী কার্যালয় ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়েও নেতাকর্মীদের আনাগোনা দিনদিন বাড়তে থাকে। ‘১০ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন’ ঘোষণা ছাড়াই এমন দিনক্ষণও মুখেমুখে ছড়িয়ে যায়।অপরদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হোসেন বাবুল ২৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনানুযায়ী গৌরীপুরসহ ১০টি উপজেলার সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন।নতুন নেতৃত্ব ও দীর্ঘদিন পরে দলের সম্মেলনকে ঘিরে উজ্জীবিত হওয়া নেতাকর্মী-সমর্থকরা এ ঘোষণা যেন দুমড়ে-মুচড়ে যান। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলন সম্পূর্ণ হয়েছে। নতুন নেতৃত্ব আর নতুন দিনের প্রতিক্ষায় নতুন আশায় বুক বাঁধছেন নেতাকর্মীরা!

শীত নিয়ে সুখবর দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গৌরীপুর উপজেলা শাখার সম্মেলন হয় ২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। সম্মেলনে গঠিত কমিটির সভাপতি, ৪জন সহসভাপতি, ১জন সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ৩জনসহ ১৭জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। শারীরিকভাবেও অসচ্ছল অনেকেই। সাংগঠনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। চার বছর ধরে হয়নি বর্ধিত সভা ও কার্যকরী কমিটির কোন সভা!সম্মেলনের পর থেকে বহিষ্কার, বিলুপ্তি আর অব্যাহতি নামক ছুরিকাঘাতে ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এ কমিটিকে অপারেশন থিয়েটারের মতো বারবার পোস্টমর্টেম করেছেন। তার পছন্দ হলে পদ আছে, অপছন্দ হলে নেই! এ রীতিতে চলছে এ শাখার কার্যক্রম। এ রীতির কারণে একই পদে এবার একাধিক দাবিদার নিয়ে রাজনীতির মাঠও সরগরম।দলীয় সূত্র জানায় ২০০৩ সনের ২৮সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল। গঠিত কমিটিতে ছিলেন ৬৭জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন সংগঠনের সভাপতি সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এমপি, ৪জন সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুল গনি, একেএম আজিজুল হক বাবু চেয়ারম্যান, অধ্যাপক মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির, অর্থ সম্পাদক শংকর হোম রায়, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুস ছালাম, কার্যকারী কমিটির সদস্য গৌরীপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আলী, তরুণ শিল্পপতি এম.এ হান্নান, আব্দুল মজিদ, আবুল কালাম, আহাম্মদ আলী, সাহাব উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল কদ্দুছ।

বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সিনিয়র সভাপতি ডা. হেলাল উদ্দিন আহাম্মেদ। ২০১৬ সালের ২ মে মারা যান সভাপতি ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এমপি। এরপরে কার্যকরী কমিটির কোন সভা না হওয়ায় দীর্ঘদিন এ পদ ছিলো শূন্য।এরপর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পত্রাদেশে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. হেলাল উদ্দিন আহাম্মেদ। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে নির্দেশ পেলে কমিটি গঠনে কার্যক্রম শুরু করা হবে।