সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর বিজয়োল্লাসে বিদ্রোহী ও সাধারণ জনতা

প্রকাশিত: ১০:১৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দেশত্যাগের পর নতুন এক অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেশটি। ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে সিরিয়া ত্যাগ করেছেন আসাদ, যা নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ার ভবিষ্যৎ।

সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল-জালালি একটি পূর্বে ধারণকৃত বার্তায় জানিয়েছেন, সরকার জনসাধারণের নির্বাচিত নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, “আমরা সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে কাজ করব। কোনও সরকারি সেবা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে।”
তিনি জনগণের সম্পদ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানান।

বাশারের পতনে মূল ভূমিকা রাখা বিদ্রোহী দল হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি বিদ্রোহীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনও ক্ষতি না করার জন্য।
টেলিগ্রামে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, “দামেস্কে অবস্থানরত সব যোদ্ধাকে নির্দেশ দিচ্ছি—সরকারি প্রতিষ্ঠানের দিকে আগাবেন না। আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে এগুলোর দায়িত্ব থাকবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হাতে।”

গোলানি সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার আসল পরিচয় “আহমেদ আল-শারআ” প্রকাশ করেন এবং সিরিয়ার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

বিরোধী দল দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স এক বিবৃতিতে বলেছে, “সিরিয়ার স্বাধীনতা অর্জন দেশটির জন্য একটি ঐতিহাসিক বিজয়। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, বরং দেশব্যাপী ন্যায়বিচার ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক।”

বিদ্রোহী ও তুরস্ক-সমর্থিত বাহিনীগুলো ২৭ নভেম্বর সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পোতে বড় ধরনের আগ্রাসন শুরু করে। দ্রুতই আলেপ্পো, হামা এবং কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহর বিদ্রোহীদের দখলে চলে যায়।

বিশেষত হোমসের পতন আসাদের জন্য চূড়ান্ত ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায়। এই অঞ্চলের পতনের ফলে দামেস্ক থেকে আসাদের রুশ মিত্রদের নৌ ও বিমানঘাঁটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

এরপর বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্ক দখল করলে আসাদ ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে চেপে দেশ ত্যাগ করেন।

আসাদের পতনের পর সিরিয়ার শহরগুলোতে উৎসব শুরু হয়। বিদ্রোহী ও সাধারণ জনগণ একত্রে বাশারের ছবি ভাঙচুর করে এবং বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠে।
আন্তর্জাতিক মহল এখন শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছে। আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় আলোচনা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার এক নতুন ভবিষ্যৎ গড়তে শুরু করেছে।