আগরতলায় প্রথমবারের মতো বিজয় দিবস উদযাপন

প্রকাশিত: ১২:৫২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় প্রথমবারের মতো যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হলো বাংলাদেশের ৫১তম বিজয় দিবস।
শুক্রবার সকালে ত্রিপুরায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। 

এদিকে ইন্ডিয়ান আর্মি প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার লিচুবাগান এলাকায় অ্যালবার্ট এক্কা পার্কে মহান বিজয় দিবসটির বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে নানান কর্মসূচি পালন করে।

সকালে অ্যালবার্ট এক্কা পার্কে সেনাবাহিনীর শহীদ স্মৃতসৌধে এবং পরম বীরচক্রপ্রাপ্ত শহীদ অ্যালবার্ট এক্কার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ। 

পৃথক পৃথকভাবে রাজ্যের আরও বিভিন্ন স্থানে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হলেও আগরতলার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ছিল বিজয় দিবসের মূল আয়োজন। এ দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও শহীদ স্মৃতসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ। পরে একে একে রাজ্যের বুদ্ধিজীবিসহ সবাই শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্মরণ করেন জাতির পিতাকে।

এ সময় অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ ছাড়াও বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণীও পাঠ করা হয়।

সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, প্রতিবছর বিজয় দিবস উদযাপন করা হলেও এ বছর একটু বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে বিজয়ের ৫১তম দিবসের অনুষ্ঠানে। তিনি বীর শহীদ অ্যালবার্ট এক্কা ও অন্যান্য বীর শহীদদের স্মরণ করেন যারা দেশরক্ষা করতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন৷

বীর শহীদ অ্যালবার্ট এক্কার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এলবার্ট এক্কা হলো সেই বীর শহীদ, যিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে আত্মদান করেছিলেন। তাকে মরণোত্তর পরমবীর চক্র উপাধিতে ভূষিত করা হয় তাকে।

হাইকমিশন কার্যালয় চত্বরের সভায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসের ইতিহাস তুলে ধরে বিস্তর আলোচনা করেছেন রাজ্যের বিশিষ্টজনেরা।

এ সময় ত্রিপুরায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, হাইকমিশনের প্রথম সচিব মো. রেজাউল হক চৌধুরী, কমিশনের প্রথম সচিব মো. আল আমিন ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধের মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত শ্যামল চৌধুরী, স্বপন ভট্টাচার্য প্রমুখ।

অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরা রাজ্যের জনগণ সম্পূর্ণভাবেই যুক্ত। যুদ্ধ চলাকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের জনগণের প্রায় সমপরিমাণ মানুষ আশ্রয় নেয় এ রাজ্যে। সে সময় তাদের আশ্রয় দেওয়া থেকে শুরু করে খাদ্য, চিকিৎসা, সেবা প্রায় সবই করা হয় নিঃস্বার্থভাবে। সেই তখন থেকেই ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই থেকে ভারত তথা ত্রিপুরা বাংলাদেশের আত্মার আত্নীয়।