পতিতাবৃত্তি-মানব পাচারকারী দলের নারী সদস্য গ্রেপ্তার, ভিকটিম উদ্ধার

প্রকাশিত: ৬:৩৫ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক ; বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে সাভারে জোরপূর্বক আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করানো ও মানব পাচারের অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪। এসময় ঘটনাস্থল থেকে অবরুদ্ধ থাকা দুই মাসের অন্তঃস্বত্তা ভুক্তভোগী এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র‌্যাব-৪। এর আগে বৃহস্পতিবার উপজেলার আমিনবাজার বড়দেশী গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই নারী পাচারকারী দলের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তবে এসময় পালিয়ে যায় চক্রের হোতা জাকির হোসেন।

গ্রেপ্তারকৃত মোছাঃ রেহানা বেগম (২২) লক্ষিপুর জেলার সদর থানা এলাকার জকসিন গ্রামের মোঃ আবু তাহেরের ছেলে চক্রের হোতা পলাতক মোঃ জাকির হোসেনের (৩৫) স্ত্রী। এঘটনায় ভুক্তভোগী তরুনী বাদি হয়ে শুক্রবার মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইন ২০১২ এর ৬(২)/১১ ধারায় সাভার মডেল থানায় একটি মামলা নং ৩০ দায়ের করেছে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, কিছু মানবপাচারকারী অল্পবয়সী কিশোরীদেরকে উচ্চ বেতনে লোভনীয় চাকুরীর নিশ্চয়তা দিয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রি করে আসছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে র‌্যাব-৪ এর একটি দল উপজেলার আমিনবাজার বড়দেশী পশ্চিমপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুই মাসের অন্তঃস্বত্তা ভুক্তভোগী এক তরুনীকে উদ্ধারসহ মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত রেহানা বেগম পলাতক তার স্বামী জাকির হোসেনের সহায়তায় ভুক্তভোগীকে বিদেশে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আসে। পরে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে একটি ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় আটকে রাখে এবং গত চার মাস যাবত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে ভয়ভীতি দেখিয়ে শারিরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করতো। এভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে জোর পূর্বক শারিরিক সম্পর্ক করার কারনে ভুক্তভোগী তরুণী দুই মাসের সন্তান সম্ভবা হয়ে পরে।

এবিষয়ে র‌্যাব-৪ এর মেজর মোহাম্মদ কামরুল সোহেল জানান, অভিযুক্তরা প্রায় তিন বছর ধরে বড়দেশি গ্রামে বসবাস করে একটি মানব পাচারকারী চক্র পরিচালনা করে আসছিলো। গ্রেপ্তারকৃতের বাড়ি ভিকটিমের নানা বাড়ির কাছে হওয়ায় গত জানুয়ারী মাসে উচ্চ বেতনে বিদেশেী চাকুরী দেয়ার কথা বলে চট্টগ্রাম থেকে ওই তরুনীকে ঢাকায় নিয়ে আসে। প্রথমে তাকে মারধর করে বাসার ভিতরে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করাতো এবং পরে আমিন বাজারের গ্রীন আবাসিক হোটেলে নিয়ে পতিতাবৃত্তি করাতো। তাদের ঘর থেকে একটি ডায়েরী জব্দ করা হয়েছে। সেখানে অনেক কাস্টমারের লিস্ট পাওয়া গেছে। মূলত পলাতক জাকির এই চক্রের হোতা। তাকে গ্রেপ্তার করা হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।