কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার-জেলারসহ ১১ জন বরখাস্ত

প্রকাশিত: ৫:২৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এ কারাবিধি লঙ্ঘন করে বন্দীর সঙ্গে এক নারীর সাক্ষাতের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার ঘটনায় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার, জেলার ও ডেপুটি জেলারসহ ১১ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি কারা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে।

হলমার্কের কারাবন্দী মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমদ বিধি লঙ্ঘন করে এক নারীর সঙ্গে সময় কাটানোর ঘটনায় সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায়, জেলার নূর মোহাম্মদ মৃধা ও ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলায়েনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ছয়জন কারারক্ষী, একজন সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর বরখাস্ত হয়েছেন বলে সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জানা গেছে।

কারাগারে নারীসঙ্গের ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার জেল সুপার রত্না রায় ও জেলার নুর মোহাম্মদ মৃধাকে বরখাস্ত করা হয়। বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজি প্রিজনকে বলা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) তদন্ত কমিটি সুরক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে ৪৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে কাশিমপুর কারাগারের ১৮ কর্মকর্তা ও কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা, চাকরিবিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া, কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিবর্তে জেলা কারাগারে পদায়ন করা, কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করাসহ ২৫টি সুপারিশ করে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, গত ০৬ জানুয়ারি কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় কালো রংয়ের পোশাক পরে স্বাচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করছিলেন কারাবন্দী হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ। তিনি আসার কিছু সময় পর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের উপস্থিতিতেই বাইরে থেকে বেগুনি রংয়ের সালোয়ার কামিজ পরা এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। তাদের সহযোগিতার বিষয়টিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে।

পরে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে অপর দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে রিসিভ করেন ডেপুটি জেলার সাকলাইন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান সাকলাইন। এর আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দী তুষার আহমদকে সেখানে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উন্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিটি গঠন করা হয়।

এছাড়া, ২১ জানুয়ারি অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেনকে প্রধান করে উপসচিব (সুরক্ষা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করে আরও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।