বন্ধুর বাসায় ডেকে নিয়ে ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ

প্রকাশিত: ৮:০৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিন রাজধানীর সোবহানবাগে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। কোচিংয়ের নোট আনতে যাওয়ার কথা বলে সে কলাবাগানে বন্ধু ইফতেখার ফারদিন দিহানের বাসায় যায়।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান এসব কথা জানান। সেখানেই ‘ধর্ষণের’ শিকার হয়ে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অসুস্থ হয়ে পড়লে আনুশকাকে নিজ গাড়িতে করে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান দিহান। হাসপাতালে ভর্তির আগেই সেখানকার আনুশকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার নিজের সোবহানবাগের বাসা থেকে কলাবাগানে বন্ধু দিহানের বাসায় যায় অনুশকা। সেখানে যাওয়ার পর আমরা জেনেছি, আনুশকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার বন্ধুর ভাস্যমতে, এরপর তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি করার আগেই আনুশকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষনিকভাবে হাসপাতালে গিয়ে লাশ উদ্ধারসহ দিহানকে নামের ওই ছেলেটিকে আটক করি। এরপর তাকে হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে সে স্বীকার করে, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্মতির ভিত্তিতে শারীরিক মেলামেশা হয়। এরপর ওভার ব্লিডিং হয়, এ কারণে আনুশকা সেন্সলেস হয়ে যায়। তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। তবে দৈহিক মেলামেশার বিষয়টি পরীক্ষা-নীরিক্ষা সাপেক্ষে প্রমাণের বিষয়। এর বাইরে অন্য কোন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়েছিলো কি-না, সেটি পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিসি বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা আল-আমিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেখানে দিহান নামের ওই একজনই আসামি, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদেরকে বিনীত অনুরোধ জানাই, ভিভিকটিমের পরিবার বুঝে-শুনে মামলা করেছে। এরপরেও এর সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

এঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত কিংবা অন্য কোন ইন্ধন থাকলে সেটা আমরা অত্যন্ত সতর্কভাবে তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করবো। তাই একটিকে অন্যখাতে প্রবাহিত না করতে সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

মামলার বাদীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাদীর অভিযোগ তার মেয়েকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। তবে ধর্ষণ হয়েছে কি-না তদন্তের ব্যাপার, পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া, ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়নাতদন্তের চিকিৎসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ধর্ষণ হয়েছে কি-না বা অন্যকোন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে কি-না পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বাসায় ডেকে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ডেকে নেয়া হয়েছে কি-না মামলাতেও উল্লেখ নেই বা তার বন্ধুও স্বীকার করেনি। দিহানের বাবা রাজশাহীতে চাকরি করেন ও ভাই নারায়নগঞ্জে চাকরি করেন। কলাবাগানের ওই বাসায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন দিহান। বৃহস্পতিবার সকালে তার মা বগুড়া যান। আমরা অনুমান করছি, বাসা ফাঁকা থাকায় আনুশকাকে ডেকে নেয়া হয়েছিলো।