মাসুদ রানা-কুয়াশা সিরিজের কপিরাইট আদেশ হাইকোর্টে স্থগিত

প্রকাশিত: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০

অনলাইন ডেস্কঃ সেবা প্রকাশনীর জনপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব শেখ আবদুল হাকিমের— কপিরাইট অফিসের দেয়া এমন সিদ্ধান্ত এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

কপিরাইট অফিসের রায় চ্যালেঞ্জ করে লেখক কাজী আনোয়ার হোসেনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রুলসহ এ আদেশ দেয়।

সংস্কৃতি সচিব, কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস এবং কপিরাইট বোর্ডকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার এ বি এম হামিদুল মিসবাহ।

কপিরাইট অফিস গত ১৪ জুন এক সিদ্ধান্তে জানায়, ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বই এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমই ওই বইগুলোর স্বত্বাধিকারী।

অধিকাংশ বইয়ের মালিকানা হারালেও ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের স্রষ্টা হিসেবে চরিত্রটি কাজী আনোয়ার হোসেনের মালিকানায় থাকছে বলে কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী সেসময় জানিয়েছিলেন।

আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ বলেন, ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বই এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমকে স্বত্ব দিয়ে কপিরাইট অফিস গত ১৪ জুন রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন কাজী আনোয়ার হোসেন।

শুনানি শেষে হাইকোর্ট কপিরাইট অফিসের রায় এক মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। রুলে এখতিয়ার বর্হিভূত হওয়ায় কপিরাইট অফিসের ওই সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের ছেলে কাজী আনোয়ার হোসেন ১৯৬৬ সালে সেবা প্রকাশনী প্রতিষ্ঠা করে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ লেখা শুরু করেন; দ্রুতই তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

পরবর্তীকালে কাজী আনোয়ার হোসেন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অন্যদের দিয়ে ‘মাসুদ রানা’ লেখাতেন। তার মধ্যে শেখ আবদুল হাকিমও রয়েছেন।

তবে ‘বাজারজাত করার স্বার্থে’ অন্যদের লেখাগুলো কাজী আনোয়ার হোসেন নিজের নামে প্রকাশ করতেন।

শুরুতে কোনো আপত্তি না থাকলেও ২০১০ সালে মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানাস্বত্ব দাবি কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন শেখ আবদুল হাকিম।

নয় বছরেও অভিযোগের কোনো সুরাহা না পাওয়ায় গত বছর ২৯ জুলাই তিনি কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

তিন দফা শুনানি, দুই পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তি ও তৃতীয় পক্ষের বক্তব্যের আলোকে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় কপিরাইট অফিস। এর ভিত্তিতে ওই বইগুলোর মালিকানা আবদুল হাকিমকে দেয়া হয়।