কালাইয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘পার্চিং’ পদ্ধতি দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২০ অনলাইন ডেস্ক : জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় চলতি আমন ধানের ক্ষেতে পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং পদ্ধতি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নে এবার চলতি আমন মৌসুমে ১৩ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর জমিতে এবং উফশী জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে। এ উপজেলার কৃষকরা এবার আমন ক্ষেতে প্রায় ৯ হাজার ৯ হেক্টর জমিতে লাইভ ও ডেড পার্চিং এর ব্যবহার করছেন। মরা ডালপালা পুঁতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং এবং জীবন্ত ধইঞ্চার ডালকে জমিতে পুঁতে দিলে তা হবে লাইভ পার্চিং। কৃষকরা তাদের আমন ফসলের ক্ষেতে ক্ষতিকারক পোকা থেকে রক্ষার জন্য বাঁশের আগা, বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল এবং জীবন্ত ধইঞ্চার ডাল পুঁতে রাখছেন। তারা বিঘা প্রতি জমিতে প্রায় ৮টি বাঁশের আগা, কঞ্চি, ডাল ও ধইঞ্চার ডাল পুঁতেছেন। এসব ব্যবহারের ফলে শালিক, বুলবুলি, ফিঙ্গেসহ বিভিন্ন ধরনের পোকা খাদক পাখি ক্ষেতের পার্চিং এর ওপর বসে সেখান থেকে উড়ে উড়ে গিয়ে ক্ষতিকারক পোকা ও পোকার ডিম খেয়ে ফেলে। এর ফলে কীটনাশক ছাড়াই পোকার আক্রমণ থেকে ধান গাছগুলো রক্ষা পাচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মহামারী করোনা ভাইরাসের মধ্যেও উপজেলার কৃষকরা যথাসময়ে তাদের জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছেন। তাদের বহু স্বপ্নের রোপণকৃত ধানের চারাগুলো এখন বড় হচ্ছে। তাছাড়া রোপণকৃত চারাগুলো এখন সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠায় কৃষকদের মনে প্রশান্তি এনে দিয়েছে। ক্ষেতে লাইভ ও ডেড পার্চিং-এর ব্যবহার করেছেন কৃষকরা। এর ফলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আগমন ঘটছে। ধানের জমিতে পার্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে শালিক, বুলবুলি ও ফিঙ্গে পাখি বসে ধানের ক্ষতিকর পোকাগুলো খেয়ে ফসল রক্ষা করছে। এছাড়া পরিবেশের সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি ধান উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষকদের কীটনাশকের ব্যবহার কমে গেছে। সেই সঙ্গে বালাইনাশকের ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশ দূষণ মুক্ত হচ্ছে। উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের সাঁতার গ্রামের কৃষক তৌফিকুল ইসলাম ও কালাই পৌরসভার সড়াইল মহল্লার কৃষক মোজাম্মেল হোসেন জানান, এবার তাদের জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। রোপণকৃত চারাগুলো এখন সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠেছে। তারা সম্পূর্ণ ক্ষেতে “পার্চিং” পদ্ধতি করেছেন। বিঘা প্রতি আমন ধানের ক্ষেতে ৫টি গাছের ছোট ডাল, বাঁশের কঞ্চি এবং ৩টি জীবন্ত ধইঞ্চার ডাল পুঁতে দিয়েছেন। ফিঙ্গে, শালিক ও বুলবুলি ওই ডালে বসে খেতের ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলছে। এতে তাদের জমিতে ভালো কাজ হচ্ছে। উপজেলার পুনট ইউনিয়নের নান্দাইল গ্রামের কৃষক খাজা মিয়া ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বালাইট গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জানান, পার্চিং পদ্ধতির ফলে ফসল উৎপাদনের খরচ কম হচ্ছে। কীটনাশকের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। এতে তারা খুব উপকার পাচ্ছেন। কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান বলেন, এই উপজেলায় এক সময় পোকা দমনে ব্যয়বহুল কীটনাশকই ভরসা ছিল কৃষকদের। তাদের উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অধিক পরিশ্রমও করছিলেন তারা। এখন পার্চিং পদ্ধতিই আশা জেগেছে কৃষকদের মাঝে। বর্তমানে পার্চিং পদ্ধতিতে বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশ দূষণমুক্ত ও পোকার বংশ বিস্তার কম হচ্ছে। সেই সঙ্গে জমিতে জৈব সার হিসেবে পাখির বিষ্ঠা পড়ে জমি উর্বরতা বাড়ছে। পার্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে এই বছরে ফসল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী। Share this:FacebookX Related posts: চাটমোহরে ধানের বাজারে নেই প্রত্যাশিত দাম, হতাশ কৃষক জয়পুরহাটে ব্রোকলি চাষে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছে কৃষক দেলোয়ার আত্রাইয়ে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ বরণ সাজে ধান ক্রয়ে অনিয়ম সহ্য করা হবে না : খাদ্যমন্ত্রী নওগাঁয় গাছে গাছে আামের মুকুলের সমারোহ আত্রাইয়ে ধানের দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি টানা বৃষ্টিতে বোরো ধান নিয়ে বেকায়দায় রাজশাহীর কৃষকরা রাণীনগরের ড্রাগন যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্রাইয়ে জলাবদ্ধতায় ৬ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি নওগাঁয় করলা চাষে ভাগ্যের বদল হয়েছে কৃষক জলিলের ইরি-বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত কৃষক মধ্য প্রাচ্যের সবজি স্কোয়াশ চাষ হচ্ছে এখন আত্রাইয়ের মাটিতে SHARES Matched Content কৃষি বিষয়: ‘পার্চিং’ পদ্ধতিকালাইয়েজনপ্রিয় হয়ে উঠেছে