নওগাঁয় গাছে গাছে আামের মুকুলের সমারোহ

প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২০

নাজমুল হক নাহিদ, নওগাঁ প্রতিনিধি : উত্তরের জেলা নওগাঁর আম বাগানগুলোর বাতাসে বিভিন্ন জাতের আম মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে। সবুজের সমারোহের মাঝে এই মুকুলগুলোই সুঘ্রাণ জানান দেয় আম মৌসুমের আগমনী বার্তার। জেলার ছোট-বড় বাগানগুলোতে গেলে দেখা মিলে আমের মুকুলের মনোরম দৃশ্য।

মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলের আম বাগানগুলো। আর আমের মুকুলের ঘ্রানে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মুকুলের ঘ্রাণে বিমোহিত সকলের মন। এবার জেলায় শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকায় বেশ আগে থেকেই মুকুলে মুকুলে শোভা পাচ্ছে পুরো জেলার আম বাগানগুলো। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহে ব্যাস্ত এছাড়াও প্রজাপতিরা এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পন এ যেন সত্যিই এক মনোমুগ্ধকর ও অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য।

ছয় ঋতুর এই বাংলাদেশে পাতাঝড়া ষড়ঋতুর রাজা বসন্ত। আবহমান বাংলার সৌন্দর্যের রাজা বলে পরিচিত গ্রীষ্মকাল। ফাগুনের ছোঁয়ায় পলাশ-শিমুলের বনে লেগেছে আগুন রাঙা ফুলের মেলা। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সু-মধুর কুহুতানে মাতাল করতে আবারও ফিরে এলো বাংলার বুক মাতাল করতে ঋতুরাজ বসন্ত।

রঙিন-বন ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে। তেমনি নতুন সাজে যেন সেজেছে নওগাঁর ১১টি উপজেলার আম বাগানগুলো। আমের মুকুলে ভরপুর আর ঘ্রাণে নওগাঁর সকল উপজেলায় সর্বত্র জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা। শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো। প্রায় ৮০ শতাংশ গাছেই এসেছে মুকুল। তাই ব্যাস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিকরা।

বাগান মালিকরা বলেন, এবার আবহাওয়া কিছুটা অনুকুলে থাকায় আমের মুকুলে রোগবালাই আর পোকার আক্রমণ কম থাকায় গাছে মুকুলও এসেছে বেশ। আর এই মুকুল গাছ থেকে ঝড়ে না যাওয়ার জন্য চলছে নিয়মিত পরিচর্যা। তবে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে আমের বাম্পার ফলন হবে এমনটি আশা করছেন তারা।

এছাড়াও এই জেলার আমের গুনগত মান ভালো হওয়ার কারণে আম অত্যন্ত সুস্বাদু এবং এই জেলার আম বিদেশসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। এছাড়া এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ছাড়িয়ে যাবে এই জেলার আম বলে আশা করছেন বাগান মালিকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, নওগাঁ একটি বরন্দ্রে অঞ্চল। এই অঞ্চল ধান চাষের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এখন কৃষকরা পানির স্বল্পতা এবং আম চাষের জন্য মাটি উপযোগী ও আম চাষ লাভজনক হওয়ার কারণে ধান চাষ ছেড়ে আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলেও আম চাষের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি। এছাড়াও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আম চাষিদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্ষার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ বছর জেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে বেমি। সবচেয়ে পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর, পত্নীতলা ও ধামইরহাটে আম চাষ বেশি হয় বলেও জানান তিনি।