রিজার্ভের টাকা খরচের হিসেব দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক ; রিজার্ভের টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় হয়েছে সে বিষয়ে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রিজার্ভের টাকা সবসময় খরচ হতে থাকে, এটা রোলিং করে। কিন্তু করোনার সময় আমদান, রপ্তানি, যোগাযোগ, যাতায়াত সবকিছু একরকম বন্ধ ছিল বলেই রিজার্ভ এতটা জমা পড়েছিল। কিন্তু করোনা শেষ হয়ে গেলে আমদানি-রপ্তানি এমনকি চাষবাষের জন্য মেশিনারিজ ক্রয়ে টাকা ব্যয় করতে হয়। করোনার ভ্যাকসিন ক্রয় এবং বিনামূল্যে টেস্ট করাসহ আনুসাঙ্গিক খাতেও অর্থ ব্যয় করতে হয়। এভাবেই এ টাকা ব্যবহার হয়েছে মানুষের কল্যাণে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) নবনির্বাচিত ৫৯ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের শপথবাক্য পাঠ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের মোট ৬২৩ জন সদস্যও শপথ নেন।

সরকার প্রধান বলেছেন, হঠাৎ একটা কথা এসেছে রিজার্ভের টাকা নাকি নাই, চুরি হয়ে গেছে। এই চুরি কীভাবে সম্ভব উল্লেখ করে বিএনপি আমল এবং বর্তমানের রিজার্ভের তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রিজার্ভের টাকা খরচ হয়েছে মানুষের কল্যাণে, তাদের প্রয়োজন মেটাতে।

সরকার প্রধান বলেন, একুশ বছর পর ক্ষমতায় এসে তার সরকার রিজার্ভ পেয়েছিল প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারের মত, যেটাকে বাড়িয়ে তার সরকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করে। আর ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে রিজার্ভ যেটা ৫ বিলিয়ন ডলার পেয়েছিল সেটাকে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করে।

তিনি বলেন, করোনা যেতে পারেনি, শুরু হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংশন এবং পাল্টা স্যাংশন। প্রতিটি পণ্যের দাম সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে। চাল, গম, ভোজ্য ও জ্বালানি তেল এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে এর পরিবহণ খরচও বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত দামে ক্রয় করতে হলেও আমরাতো দেশের মানুষকে কষ্ট দিতে পারিনা, যেখানে যত দামই লাগুক আমরা কিন্তু কিনে নিয়ে আসছি। মানুষকে দিচ্ছি।

রিজার্ভের টাকা খরচের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন-
১. টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে এক কোটি মানুষকে আমরা স্বল্পমূল্যে খাদ্য সরবরাহ করছি।
২.৫০ লাখ মানুষকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করেছি।
৩. বিনামূল্যে ঘর তৈরি করে দিয়েছি।
৪. আধুনিক বিমান ক্রয় করেছি। সেই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিমান নিয়েছে এবং ২ শতাংশ সুদে সেই টাকা আবার ফেরত দিচ্ছে।
৫. রপ্তানি খাতে আমরা প্রণোদনা বাবদ ৮ বিলিয়ন খরচ করেছি। রপ্তানি থেকে কিন্তু আমাদের লোকেরাই লাভবান হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিতে যাইনি। ২০০১ সালের পর আমাদের নেতাকর্মীরা যেভাবে নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা কিন্তু কারও ওপর নির্যাতন করিনি। আমি তাকে (খালেদা জিয়া) যেখানে এভাবে সুযোগ দিয়েছি অথচ সে কী আচরণ করেছে আমার সঙ্গে। তার ছেলে কোকো যে টাকা পাচার করেছিল, সে টাকাও কিন্তু আমরা কিছু অংশ ফেরত আনতে পেরেছি। কোকো মারা গেছে আর তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে। সেই তারাই আবার অর্থপাচারের কথা বলে কোন মুখে।

তিনি বলেন, আমি খালেদার প্রতি দয়া দেখিয়েছি, তাকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছি। কারণ, আমরা তো তাদের মতো এতো ছোট মন নিয়ে আসিনি।