হাজী সেলিমের ছেলে গ্রেফতার, বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে র‌্যাব

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ এরফান সেলিমকে গ্রেফতার করেছেন র‌্যাব।

সোমবার দুপুরে হাজী সেলিমের পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তা এলাকার বাসভবন মদিনা টাওয়ার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র‌্যাবের একটি সূত্র।
এর আগে রোববার রাতে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খান ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) করে। পরে সোমবার সকালে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে এরফানসহ চারজনের নাম উল্লেখ্য করে একটি মামলা করেন। ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরো জানান, মামলার পর গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যার পর ধানমণ্ডিতে কলাবাগান ক্রসিংয়ের কাছে হাজী সেলিমের গাড়ির সঙ্গে নৌবাহিনী কর্মকর্তার মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে উত্তেজিত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফকে মারধর ও গালাগাল করে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, প্রোটকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু, মোহাম্মদ জাহিদ ও মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও তিনজন।

এদিকে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে কলাবাগানের দিকে যাচ্ছিলেন। ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো একটি কালো রঙের ল্যান্ড রোভার গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৫৭৩৬) পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়।

ওয়াসিফ ও তার স্ত্রী ধাক্কা সামলে মোটরসাইকেল থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ওই গাড়ি থেকে জাহিদ, দীপু ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিনজন ‘অশ্লীল ভাষায় গালাগাল’ করতে করতে নেমে আসে এবং ‘মারধর’ শুরু করে। তারা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ ও তার স্ত্রীকে ‘উঠিয়ে নেয়ার এবং হত্যার’ হুমকি দেয় বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

পরে ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো হলে সংসদ সদস্যের গাড়ি ফেলে মারধরকারীরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এমপির গাড়ি ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তার মোটরসাইকেল ধানমণ্ডি থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে এ ঘটনার পর মোবাইল ফোনে একটি ভিডিও ধারণ করেছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। এরই মধ্যে ভিডিওটি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, আহত নৌবাহিনীর কর্মকর্তা নিজেকে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ বলে পরিচয় দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিচ্ছেন।

নৌবাহিনীর এই কর্মকর্তাকে রক্তাক্ত মুখে বলতে শোনা যায়, তিনি পরিচয় দেয়ার পরও তাকে মারধর করা হয়েছে, তার স্ত্রীর গায়েও ‘হাত দিয়েছে’।

এবিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ওই গাড়িটি সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের। ঘটনার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন না। তার ছেলে এরফান সেলিম, নিরাপত্তারক্ষীসহ ৫-৬ ছিলেন।

উল্লেখ্য, হাজী ছেলের ছেলে এরফান, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী- ৪ (সদর- সুবর্ণচর) আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর মেয়ের জামাই।