পদ্মা সেতুর ৪ হাজার ৮০০ মিটার দৃশ্যমান, বসেছে ৩২তম স্প্যান

প্রকাশিত: ৬:২৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতুর অবশিষ্ট ১০টি স্প্যান বসানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু পদ্মার মাঝ বরাবর নদীর তলদেশে শক্তমাটি না থাকায় সেই কাজ সম্ভব হয়নি।

চলতি বছরের জুনে সেতুর ৩১তম স্প্যান বসানো হয়। এরপর মহামারি করোনা ও বন্যার কারণে প্রায় চার মাস আর কোনও স্প্যান বসানো সম্ভব হয়নি।

এদিকে শনিবার (১০ অক্টোবর) বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুতে ৩২তম স্প্যান বসানোর কথা ছিলো। কিন্তু পদ্মার তালদেশের মাটিতে বহুবার নোঙর ফেলেও স্প্যানবাহী ক্রেনকে দাড় করাতে না পারায় শনিবার সারাদিন চেষ্টাপর কাজ স্থগিত করে সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্প্যানবাহী ক্রেন পিয়ারের কাছে নোঙর করতে পারেনি এ কারণে ৩২তম স্প্যানটি বসানো যায়নি।

এদিকে রোববার (১১ অক্টোবর) সকালে বহুমুখী সেতুটির ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটির ওপর স্থাপন করা হয়েছে ৩২তম স্প্যান। ৩১তম স্প্যান বসানোর ৪ মাস পর এই স্প্যানটি বসানো হলো। এটি বসানোর পর মূল সেতুর অবকাঠামোর দৈর্ঘ্য দাঁড়াল ৪ হাজার ৮০০ মিটার বা প্রায় ৫ কিলোমিটার।

গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ৫টি স্প্যান খুঁটির ওপর বসানোর লক্ষ্য ছিল। তবে মাওয়া প্রান্তের মূল পদ্মায় প্রচণ্ড স্রোত থাকায় একটি স্প্যানও বসানো সম্ভব হয়নি। এখন পদ্মায় বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের তীব্রতাও স্বাভাবিক গতিতে ফিরেছে। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজেও গতি ফিরেছে।

তবে শনিবার মাওয়া প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটির ওপর পদ্মা সেতুর ৩২তম স্প্যান বসানোর দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হলেও পরে তা সম্ভব হয়নি।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি খুঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি। আর ৪২টি খুঁটির ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩২টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

বহুমুখী এ সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।