‘আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারতে চাইলে একটাকেও ছাড়বো না’

প্রকাশিত: ২:৪৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্দোলনের নামে আবার মানুষ পুড়িয়ে মারতে চাইলে তাদের একটাকেও ছাড়বো না। আমরা সহ্য করেছি, এটাকে অনেকে দুর্বলতা বলে। এটা আমাদের দুর্বলতা না।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহিলা আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, নারীদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। গৃহহীনদের ঘরসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আর বিএনপি ক্ষমতা থাকতে তেমন কিছুই করেনি। ধর্ষণসহ নারীর বিরুদ্ধে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে।

যুদ্ধের ময়দানে ব্যবহৃত গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময় আওয়ামী লীগের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে। সেগুলো তারা ভুলে যায় কীভাবে? আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো অর্জনে নারীদের অবদান থাকতে হবে। সমাজের অর্ধেক নারী। তারা অচল থাকলে সমাজ এগিয়ে যাবে না। নারী-পুরুষকে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। আমি নারীদের বিচারপতি, সচিব, ডিসি, এসপি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পথ সুগম করি। আজকে আমাদের মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে।’

ইসলাম ধর্মই একমাত্র নারীদের সমান অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম ধর্মই একমাত্র ধর্ম, যেখানে নারীদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। সম্পদে স্বামী ও বাবার সম্পদে নারীর অধিকার দিয়েছে ইসলাম। অথচ ধর্মের নামে নারীদের ঘরে রেখে দিতে চায়, তারা জানে না।

নারীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মেয়েরা স্বামীদের কাছে কত কিছু দাবি করে। আমার মাকে দেখিনি কোনোদিন কিছু দাবি করতে। বরং তিনি বাবাকে বলতেন, তুমি তোমার কাজ করে যাও। সংসারসহ সব কিছু আমি দেখবো। বাবাকে যখন হত্যা করে, তখনো বলেছিলেন তাকে যেহেতু হত্যা করেছ, আমাকেও হত্যা করো।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সম্মেলনে শোক প্রস্তাব উত্থান করেন মহিলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রোজিনা রোজি।

এর আগে দুপুর সোয়া ২টায় কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। ২টা ৫০ মিনিটে সম্মেলনের মঞ্চে আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। জবাবে নেতাকর্মীদের হাত নেড়ে অভিবাদন জানান তিনি। পরে ফুল দিয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানো হয়।

এদিন সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিচিল নিয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে উপস্থিতির সংখ্যাও। সম্মেলনকে ঘিরে পুরো উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে। শাহবাগ চত্বর থেকে মৎস্য ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট চত্বরে মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত।

মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের অনুসারীদের নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যাচ্ছে সম্মেলনে। এই দুই পদের বিপরীতে প্রায় ৪০ জন তাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এই দুই পদে আজ সম্মেলন থেকে নাম ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নেতারা।

প্রসঙ্গত, মহিলা আওয়ামী লীগের পঞ্চম জাতীয় জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালের ৪ মার্চ। সে সময় সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পান সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক হন মাহমুদা বেগম।