প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের মানববন্ধন

প্রকাশিত: ৯:০৩ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজধানীর প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন করছেন সাংবাদিকরা।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ)।

একইসঙ্গে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, বরিশাল ডিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন।

মানববন্ধনে বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাস বলেন, ‘প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে- এর বিরুদ্ধে আমরা আজকে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি। আমরা তার মুক্তি চাই, তার সঙ্গে যারা অন্যায় কাজগুলো করেছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
দৈনিক সময় সংবাদ
তিনি বলেন, ‘রোজিনা ইসলামকে ডেকে নিয়ে কাগজ ধরিয়ে নাটকের মতো করে অভিযোগ দাঁড় করানো হয়েছে। আমার দুটি প্রশ্ন- একটি অভিযোগ দিতে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছয়টি ঘণ্টা অপেক্ষা করেছে। ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করার কারণটা কী? কী এমন অপরাধ করেছে সে?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছি, চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেব। তাকে আমরা মুক্ত করবোই।’

মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের আন্দোলনের সঙ্গে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাত্মতা প্রকাশ করছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আগামীকাল সকাল ১০টায় আবারও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করবো।’

তিনি বলেন, ‘দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই- সরকারি অর্থায়নে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এখনই বন্ধ করতে হবে। এই অর্থ জনগণ দেয়, সেই অর্থ লুটপাটকারীরা ব্যবহার করবেন, তাদের ভাবমূর্তি উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করবেন, সেটা আমরা কোন ভাবেই মানব না। ঘটনা তদন্তে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। এটা আমলাদের কর্তৃত্বে হতে পারে না।’

মানববন্ধনে বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব আবদুল মজিদ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার ছাড়াও অন্যান্য সাংবাদিক নেতারা বক্তব্য দেন।

বক্তারা সাংবাদিক রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে তাকে আটকে রেখে হেনস্তা করার নিন্দা জানান। রোজিনার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।

গত সোমবার (১৭ মে) পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে রোজিনা ইসলামকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়।

অনুমতি ছাড়া করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখার পর রাত সাড়ে ৮টার পর শাহবাগ থানার পুলিশ সচিবালয় থেকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে যায়। রাত পৌণে ১২টার দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী বাদি হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় তার বিরুদ্ধে ‘বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টস চুরির’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার ঢাকার সিএমএম আদালতে রোজিনা ইসলামকে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২০ মে) জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।

পরে তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে নেয়া হয়।