শিশুরাও যেন চলচ্চিত্র থেকে শিখতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৫:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২১

সময় সংবাদ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের জন্য এমনভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে, যাতে তারা সেখান থেকে ভবিষ্যত জীবন গড়ার অনুপ্রেরণা পায়।

রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর মধ্যে দিয়ে কিন্তু একটা শিশু তার জীবনটাকে দেখতে পারবে, জীবনটাকে তৈরি করতে পারবে, বড় হতে পারবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা, তার মধ্যে দিয়ে তাদের শিক্ষনীয় বিষয়গুলো প্রতিফলিত করা, এটাও কিন্তু আমাদের করতে হবে।”

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই সামাজিক দায়িত্বটুকু পালন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সিনেমাগুলো সেইভাবেই তৈরি করতে হবে, যেন পরিবার পরিজন নিয়ে দেখতে পারে।”

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প নষ্ট হয়ে যাক- সেটা সরকার কখনো চায় না। এক সময় টেলিভিশন যুগের আবির্ভাবে সিনেমা শিল্প থমকে গেলেও এখন আবার সিনেমার যুগ ফিরে এসেছে।

“শুধু বাংলাদেশেই না, এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানুষ সিনেমা দেখছে। হয়ত হলে যায় না, ঘরে বসে দেখে। কিন্তু হলেও আমাদের মানুষ টানতে হবে। আর মানুষ যাতে আসে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সচেতন করতে দায়িত্ব পালন করায় চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়ন ও প্রসারে জাতির পিতার নেওয়া ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এই শিল্পের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপেরও কথাও অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মহামারীর মধ্যে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় নিজের দুঃখের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি তো আছি সব সময় আপনাদের পাশে। কারণ আমার বাবার হাতে গড়া এফডিসি। এই সিনেমা তৈরি করার যে উৎসাহটা, সেটা তিনি দিয়েছিলেন। কাজেই সেদিকটা মাথায় রেখে সব সময় আমি কাজ করি।”

সমাজে শিল্পীদের একটি আলাদা সম্মান আছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আলোচনা করে দেখব যে অন্তত যারা আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন, তাদের সম্মানটা যেন তারা সব সময় পান, সেই ব্যবস্থাটা করার জন্য যা করণীয়, আমরা করব।”

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সিনেমা শিল্প অনেক অবদান রাখতে পারে। সেইভাবেই আপনারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানুষকে আরো উদ্বুদ্ধ করা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন আমাদের ইতিহাসটা জানতে পারে, বিজয়ের ইতিহাস জানতে পারে এবং মানুষ যেন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আপনারা করবেন।”

এখন তরুণরা চলচ্চিত্র শিল্পে এগিয়ে আসায় ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি, আজ আছি কাল নেই। কিন্তু আমাদের তরুণ সমাজ যে সিনেমা শিল্পের দিকে… তাদের আগ্রহ বেড়েছে, তারা যে এগিয়ে আসছে, আমরা মনে করি এটা ভালো লক্ষণ।”

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এবং তথ্যসচিব খাজা মিয়াও বক্তব্য দেন।

২০১৯ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে ২৫টি ক্যাটাগরিতে মোট ৩১ জনকে এ অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয়।