গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৬৮৬

প্রকাশিত: ৪:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : গত বছর ৪ হাজার ৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৬৮৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৬শ জন।

শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রসমূহে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

এতে দেখা গেছে, একই সময় রেলপথে ৩২৩টি দুর্ঘটনায় ৩১৮ জন নিহত ও ৭৯ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৮৩টি দুর্ঘটনায় ৩১৩ জন নিহত ও ৩৪২ জন আহত এবং ৩৭১ জন নিখোঁজ হয়। সড়ক, রেল, নৌ-পথে সর্বমোট ৫ হাজার ৩৯৭টি দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩১৭ জন নিহত এবং ৯ হাজার ২১ জন আহত হয়েছেন।

বিদায়ী বছরের ৪ হাজার ৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত দুই হাজার ৩৯ জন চালক, ১ হাজার ৫৯৪ জন পথচারী, ৭৫৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭০৬ জন ছাত্র-ছাত্রী, ১০৪ জন শিক্ষক, ২০০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৯১৮ জন নারী, ৫৪১ জন শিশু, ২৯ জন সাংবাদিক, ২৭ জন চিকিৎসক, ০৮ জন আইনজীবী ও ০৫ জন প্রকৌশলী এবং ১৪৪ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ০৯ জন মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় মিলেছে।

এর মধ্যে ১ হাজার ৩৯২ জন পথচারী, ১৫ জন সেনা সদস্য, ৫২ জন পুলিশ, ১৫ জন আনসার সদস্য, একজন র‌্যাব সদস্য, দু’জন বিজিবি সদস্য, একজন সিআইডি সদস্য, একজন নৌ-বাহিনীর সদস্য, একজন বিমানবাহিনীর সদস্য, ০৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ০৫ জন সাংবাদিক, ৬৫৬ জন নারী, ৪১৮ জন শিশু, ৩৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৯২ জন শিক্ষক, ১ হাজার ৩৯০ জন চালক, ৩৫৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ০৪ জন প্রকৌশলী, একজন আইনজীবী, ১১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ২৩ জন চিকিৎসক নিহত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপে দেখা গেছে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ২২০ জন পঙ্গুত্ব বরণ করেন।

উল্লেখিত সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৬ হাজার ৭৩৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ বাস, ২৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৪ দশমিক ৮০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯ দশমিক ০৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫২ দশমিক ৯৬ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ০৬ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭ দশমিক ০৮ শতাংশ খাদে পড়ে, ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ বিবিধ কারণে, দশমিক ৩৪ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং দশমিক ৮১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত যানবাহনের ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ মোটরসাইকেলে, ৩ দশমিক ৩২ শতাংশ নসিমন-মাহিন্দ্রা-লেগুনায়, ১ দশমিক ০৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইকে, ০ দশমিক ১৯ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাসে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ বাস, ১ দশমিক ৪২ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-লরি, দশমিক ৮৩ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনা কমেছে।

পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ, বেপরোয়া গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হায়িয়ে খাদে পড়ার ঘটনা দশমিক ৯৯ শতাংশ ও ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা দশমিক ১৬ শতাংশ কমলেও মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।

দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২ দশমিক ০৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও দশমিক ৮১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বিগত বছরের চেয়ে বিদায়ী বছরে আঞ্চলিক মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও জাতীয় মহাসড়কে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, রেলক্রসিং এ দশমিক ১৬ শতাংশ, ফিডার রোডে ২ দশমিক ১৯ শতাংশ কমেছে।