চলেই এল শীতকাল

প্রকাশিত: ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২০

নিউজ ডেস্ক :আসি আসি করে শীতকাল এসেই পড়ল। শনিবার, সকাল সাড়ে ৭টা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাস্তায় পুলিশের একটি টহল গাড়িতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বসে ছিলেন। একটু দূরেই তাদের দুই সহকর্মী দাঁড়িয়ে ছিলেন যাত্রী ছাউনির সামনে। তারা দুজনই ইউনিফর্মের ওপর জ্যাকেট পরে আছেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে উপস্থিত সদস্যদের একজন জানান, সপ্তাহখানেক আগেও শীতের পোশাক পরার কথা মাথায়ও আসেনি। হঠাৎ করে গত দুদিন ধরে হু হু বাতাসের সঙ্গে বেশ ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে রাত জেগে টহল দেয়ার সময় ঠাণ্ডা যেন একটু বেশিই জেঁকে ধরছে। এই হঠাৎ ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতেই গরম জ্যাকেট পরেছেন বলে জানান তারা।

কিছুদুর এগিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে একজন সবজি বিক্রেতাকে দেখা যায় কানে-মাথায় মাফলার জড়িয়ে আছেন। শমসের আলী নামে ওই ব্যক্তি জানান, ফজরের নামাজের পরপর কারওয়ানবাজার থেকে পণ্য কিনে আনতে যাওয়ার সময় বেশ ঠাণ্ডা বাতাস ও শীত অনুভূত হয়। ঠাণ্ডা লেগে যাওয়া থেকে বাঁচতে মাফলার পরেছেন বলে জানান তিনি।

তাদের মতো ভোরে ঘরের বাইরে বের হওয়া অনেককেই দেখা গেছে গায়ে চাদর জড়িয়ে কিংবা একটু ভারী পোশাক পরে বের হতে। কেউ আবার প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হালকা জবুথবু ভঙ্গিতে ছুটছেন গন্তব্যের দিকে।

গত দুদিন ধরে নগরবাসীর মনে প্রশ্ন, তবে কি শীত এসেই গেল?

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হঠাৎ করেই যেন নগরীতে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। কাঠফাটা গরম কমে গিয়ে এখন অবশ্য বিরাজ করছে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া। না গরম, না ঠাণ্ডা এমন সুন্দর আবহাওয়ায় শহুরে মানুষের চলাফেরায়ও স্বাচ্ছন্দ্য ফিরেছে। কিছুদিন আগেও যেখানে ফ্যান-এসি ছাড়া চলতই না, সেখানে এখন কেউ কেউ রাতের বেলায় গায়ে জড়াচ্ছেন কাঁথা।

এদিকে, শীতকে লক্ষ্য করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন কাপড় ব্যবসায়ীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বঙ্গবাজার, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা গত কয়েকদিন ধরে শীতের কাপড় মজুদ করতে শুরু করেছেন। টুকটাক বিক্রিও হচ্ছে। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে গরম কাপড়ের চাহিদাপত্র আসছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, চলতি মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্য়ন্ত পূর্বাভাসে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি লঘুচাপ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। শনিবার অস্থায়ীভাবে আকাশ মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ৩১দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ছিল শ্রীমঙ্গলে ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার রাজধানী ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে শনিবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ১৯দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।