‘মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যিনি কাজ করছিলেন, তাকেই খুনিরা হত্যা করল’

প্রকাশিত: ৭:১৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, একটি জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছিলেন তাকেই খুনিরা হত্যা করল।’
রোববার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালী এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে তিনি এ কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এ সভার আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানিরা পারেনি। কিন্তু জাতির পিতার যাদের প্রতি বিশ্বাস ছিল, ভালোবাসা ছিল তারাই জাতির পিতাকে হত্যা করে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।’

তিনি বলেন, ‘যে আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু এই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেই আদর্শ এবং লক্ষ্য ধ্বংস করাই ছিল খুনিদের লক্ষ্য। তারা কখনই চায়নি বাংলাদেশের উন্নয়ন হোক। এই চক্রান্তের সঙ্গে খন্দকার মোশতাক যেমন জড়িত তেমনি জিয়াউর রহমানও জড়িত ছিলেন। এই কারণে যে খন্দকার মোশতাক যখন অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করে তখন জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী প্রধান করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদ মোশারফ থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধে যাদের সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল তাদেরকে বেছে বেছে হত্যা করে জিয়াউর রহমান। সেনাবাহিনীর মেধাবী অফিসারদেরও একে একে হত্যা করা হয়েছে। জিয়া কোনদিনও তাদের পরিবারের খোঁজখবর নেয়নি। এছাড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কত নেতাকর্মীকে গুম করেছে তার শেষ নেই।’

তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত একটা দেশ। সেই দেশের শাসনভার হাতে নিয়ে তিনি যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছিলেন সেই সময় প্রয়োজন ছিল এদেশের সব মানুষের একাত্ম হয়ে তার পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য তাকে হত্যা করার এই প্রক্রিয়াটা শুরু করার জন্য দেখা গেছে আমাদের দলের অভ্যন্তরে যেমন নানা ধরনের খেলা শুরু হয় এবং কিছু লোক সব সময় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীনও দালালি করতে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘আর পাশাপাশি জানা-অজানা বা যেভাবে হোক কিছু লোক নানা ধরনের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। যারা সে সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণের পর পর সমালোচনা করেছে বা লিখেছে- হ্যাঁ সমালোচনার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমন ভাবে তাদের লেখেনি এবং তাদের কার্যাকলাপ ছিল এবং পরিকল্পিত ভাবে সারা বাংলাদেশে অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্যটাই ছিল জাতির পিতা যে জনপ্রিয়তা, সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে যে গ্রহণযোগ্যতা সেটা নস্যাৎ করা। সেটা যখন তারা একান্ত ভাবে পারেই নাই, তারপরই কিন্তু তারা হত্যার পথ বেছে নেয়।’

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকাবহ যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করা হয়। সূচনা বক্তব্য রাখেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

এরপর বঙ্গবন্ধুর কর্মময় ও সংগ্রামী জীবনের ওপরে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন আসাদুজ্জামান নূর এমপি।

এছাড়া, আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।