দাম বেড়েছে সবজি, ডিম ও সয়াবিন তেলের

প্রকাশিত: ১০:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে চলমান সর্বাত্মক লকডাউনের তৃতীয় দফায় গতকাল শনিবার থেকে আবারও উর্ধ্বমুখী কাঁচাবাজার। বিভিন্ন সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকাসহ ডিম, তেল ও অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে।

সেই সাথে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে বাজারে নতুন আমদানি হওয়া গাজর, টমেটো ও শশা। এদিন বিভিন্ন বাজার ঘুরে পণ্যের এমন উর্ধ্বমুখী দাম লক্ষ্য করা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের কারণে বাইরে কাঁচামাল রাজশাহীতে ঢুকছে না। মানুষের চাহিদার চেয়ে কাঁচামালের যোগান কম হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি। তবে দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে বিভিন্ন সিণ্ডিকেটকে দুষছেন সাধারণ ক্রেতারা।

রাজশাহীর কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি পটোল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শশা ৮০ টাকা, ঢেড়স ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচু ৫০ টাকা, লাউ ৪০ টাকা, কুমড়া ৪০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, দেশি গাজর ৫০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, ভারতীয় টমেটো ১২০ টাকা, সজনে ডাটা ১০০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, আলু ২০ টাকা, দেশি আলু ২৫ টাকা ও কাকরোল ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

নির্দিষ্ট কয়েকটি সবজির দাম কেন এত চড়া? জানতে চাইলে বিক্রেতা মো. মুনজুর হোসেন বলেন, লকডাউনের কারণে বাইরের গাড়ি রাজশাহীতে ঢুকছে না। এই সময় রংপুর, পঞ্চগড় থেকে হাইব্রীড শশা বাজারে আমদানি হয়। তখন দাম কম থাকে। কিন্তু এখন সেটা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে দাম বেশি।

এদিকে পাইকারি বিক্রেতা মো. রাজু জানিয়েছেন, শনিবার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, আদা ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, রসুন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ও শুকনা মরিচ ২২০ থেকে ২৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

দাম বেড়েছে সয়াবিন তেলের। প্রতি লিটার সয়াবিন ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ ও কোথাও কোথাও ১৫০ টাকাতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও প্রতি হালিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকাতে বিক্রি হয়েছে।

বাজারে দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্রেতা হাসান আল মবিন মামুন বলেন, রাজশাহীতে ছাত্ররা নেই। বলতে গেলে ৮০ শতাংশ মানুষই শহরে নেই। তাহলে কিভাবে শহরে কাঁচাপণ্যের চাহিদা এত বেশি হয়, এবং দাম বাড়ে?

এদিকে মাছের বাজারে প্রতি কেজি ট্যাংরা ৬০০ টাকা, পিয়ালি ৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, মোয়া ৪০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, সিলভার ২০০ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই ৩০০ টাকা, বোয়াল ৮০০ টাকা, চিংড়ি ১০০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকায়।

মাছ বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের কারণে গাড়ি বন্ধ থাকায় পর্যাপ্ত মাছ আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য দাম একৎটু বেশি। গাড়িঘোড়া সচল হলে দাম কমবে।

বাজারে গরুর মাংসের দাম ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়া খাশির মাংস ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আর মুরগির মধ্যে ব্রয়লার ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, সোনালী ১৯০ টাকা, সাদা লেয়ার ২০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

সাহেব বাজারের এপি চাউল ভাণ্ডারের মালিক অশোক প্রসাদ জানান, বাজারে প্রতি কেজি আটাশ নতুন ৫২ টাকা, পুরাতন ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা, মিনিকেট নতুন ৫৮ টাকা, পুরাতন ৬২ টাকা, জিরাশাল নতুন ৫৮ টাকা, পুরাতন ৬০ থেকে ৬২ টাকা, বাসমতি নতুন ৬৬ টাকা, পুরাতন ৬৮ টাকা, নাজিরশাল ৬৮ টাকা, কাটারীভোগ সেদ্ধ নতুন ৬০ টাকা, পুরাতন ৭৫ টাকা, স্বর্ণা ৪৮ টাকা, কালজিরা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, চিনিগুড়া ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, বালাম ৬৫ ও রনজিত ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এই চাল বিক্রেতা বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের দাম একইরকম রয়েছে। বাড়েওনি, কমেওনি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, রাস্তায় ক্লিয়ার হলে চালের দাম কমতে পারে।