কালো ছত্রাক কি?

প্রকাশিত: ১২:৫২ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিউকরমাইকোসিস বা কালো ছত্রাক বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস একটি বিরল সংক্রমণ। মিউকর মোল্ডের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ ঘটে। মাটি, গাছপালা, বিষ্ঠা, এবং পচা ফল ও সবজি থেকে কেউ মিউকর মোল্ডের সংস্পর্শে আসতে পারেন।

মাটি ও বাতাস এবং এমনকি সুস্থ মানুষের নাকে বা কফেও এটা পাওয়া যায়।

যাদের মধ্যে এর সংক্রমণ ঘটেছে, তাদের মাথা ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে রক্তা পড়া, মুখের একপাশ ফুলে যওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া বা চোখে ব্যথা করা, চোখের পাপড়ি ঝরে পড়া, ঝাপসা দেখা এবং এক সময় দৃষ্টি হারানোর মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে নাকের পাশপাশে চামড়ায় কালচে দাগ দেখা দিতে পারে।

এ ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে আক্রমণ করে। ডায়াবেটিস, এইডস বা ক্যান্সারে যারা আক্রান্ত, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দারুণ ভাবে দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে এ সংক্রমণ প্রাণঘাতি হয়ে উঠতে পারে।

মিউকরমাইকোসিস বা কালো ছত্রাকের মধ্যে রাইজোপাস প্রজাতি হলো সবচেয়ে বেশি দায়ী, তবে অন্যান্য জীবাণু যেমন মিউকর, কানিংহামেলা, অ্যাফোফিজোমাইসেস, লিচথিমিয়া, সাকসেনিয়া, রাইজোমুকর এবং অন্যান্য প্রজাতিও এই রোগের কারণ।

এই ছত্রাক সর্বব্যাপী- মাটি, পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে থাকলেও সংক্রমণক্ষমতা এতই কম যে এক লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র এক–দুজনের এই জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। কিন্তু কোন কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেই কেবল এই সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যেটা এক লাখে ২০ থেকে ৩০ জন হতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগী, বিশেষত কিটো অ্যাসিডোসিসে আক্রান্তরা উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। তাছাড়া ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী, অতিরিক্ত ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, অত্যধিক স্টেরয়েড গ্রহণ করা, কিডনি বা অন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা রোগী এবং চরম অপুষ্টিজনিত রোগীদের কালো ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। চামড়ার গভীর ক্ষত ও পোড়া ঘায়েও এই রোগ হতে দেখা যায়।

ইদানীং ভারতের কোন কোন স্থানে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে কালো ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন।

এই ছত্রাক মানুষের শরীরে শ্বাসনালি ও নাকের মধ্য দিয়ে, খাবারের সঙ্গে বা ত্বকের কোন ক্ষত বা প্রদাহের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে থাকে। আক্রান্ত অংশ আর নাকের শ্লেষ্মা, কফ, চামড়া ও চোখ কালো রং ধারণ করে বলে একে কালো ছত্রাক নামে ডাকা হয়। মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত এবং সঠিক চিকিৎসা না করতে পারলে ৫০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ রোগী মৃত্যুবরণ করে থাকে। আর অভ্যন্তরীণ সংক্রমণের মৃত্যুর হার ১০০ শতাংশের কাছাকাছি। সূত্র, ইন্টারনেট।