‘দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে’

প্রকাশিত: ৮:৪৬ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মানুষকে সুরক্ষা প্রদানে সম্ভব সবকিছুই সরকার করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে প্রযুক্তির ব্যবহার জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে হ্রাস করলেও জনগণকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।’

রোববার সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২২৫টি স্থাপনার উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আর একটা ঘূর্ণিঝড় কিন্তু আসছে। আমরা আধুনিক প্রযুক্তির কারণে অনেক আগে থেকেই জানতে পারি। আর এসব বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা আমরা ইতোমধ্যে নিতে শুরু করেছি। ইনশাল্লাহ আমরা সতর্ক থাকবো এবং ঝুঁকি হ্রাস করতে পারবো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বান্তকরণে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেননা, সম্পদ চলে গেলে সম্পদ পাওয়া যায়, কিন্তু‘ জীবন চলে গেলে আর পাওয়া যায় না। এ জন্য জনসচেতনতা বেশি প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, টর্নেডো, বজ্রপাত, ভূমিধ্বস অথবা ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড সবকিছুতেই মানুষকে রক্ষা করা বা সুরক্ষিত রাখার জন্য যা যা করণীয় সে ব্যবস্থাগুলো আমরা করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখতে হবে এটা ব-দ্বীপ। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে। তাছাড়া, বাংলাদেশে মাঝে মাঝে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগও আসে। সব মোকাবেলা করেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা এগিয়ে যাব।’

তিনি তাঁর ভাষণে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ থেকে ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ উদ্ধৃত করেন এবং বলেন, ‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, সঠিক দিক নির্দেশনা, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, আদর্শ নিয়ে চললে বাংলাদেশের মানুষকে কেউ কখনও দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সেভাবেই দেশকে গড়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সকলকে পুনরায় সতর্ক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান পূনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকলে মিলে এই দুর্যোগকেও আমরা প্রতিহত সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।’

দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজের কাজ নিজে করা, বিশেষ করে যুবসমাজ যাতে নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে তার ওপর জোর দেন তিনি।

মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এদিন দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ১১০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি জেলা ত্রাণ গুদাম-কাম-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র ও পাঁচটি মুজিব কিল্লার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি একইসঙ্গে ৫০টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়। গণভবন থেকে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীর সূবর্ণচর, বরিশালের উজিরপুর এবং গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর উপজেলার উপকারভোগীদের সঙ্গে পরে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন। বাসস।