অগাস্টে ৩৮৮ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৫৯

প্রকাশিত: ১০:১৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : দেশের সড়ক, মহাসড়কে গত অগাস্ট মাসে ৩৮৮টি দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬১৮ জন।বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, একই সময় রেলপথে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ৪১টি দুর্ঘটনায় ৮০ জন নিহত ও ৫২ জন আহত ও ৩১ জন নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে।

সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৪৪৪টি দুর্ঘটনায় ৫৫৩ জন নিহত ও ৬৬৯ জন আহত হয়েছেন।

দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

অগাস্টে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ১৯৮ জন চালক, ১২৫ জন পথচারী, ৮০ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ৩৮ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৯ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ০৬ জন পুলিশ, একজন বিমানবাহিনী, একজন সিআইডি ও একজন সেনাবাহিনীর সদস্য, ৯ জন শিক্ষক, ৮ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৩ জন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক ও একজন প্রকৌশলীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

এর মধ্যে নিহত হয়েছেন, ১৬৭ জন চালক, ১১০ জন পথচারী, ৬৩ জন নারী, ৩৪ জন শিশু, ৩২ জন ছাত্র-ছাত্রী, ১৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৬ জন শিক্ষক, ৩ জন চিকিৎসক, ৫ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য (৩ জন পুলিশ, একজন বিমানবাহিনী, একজন সিআইডি), একজন প্রকৌশলী ও একজন সাংবাদিক।

অগাস্টে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ১৬ দশমিক ১২ শতাংশ বাস, ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

গত মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ০৪ অগাস্ট। এই দিনে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৯ অগাস্ট। ৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ৩ জন আহত হয়।

মোট দুর্ঘটনার ৫২ দশমিক ৮৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা। ২৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ খাদে পড়ে, ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০ দশমিক ২৫ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ ও ০ দশমিক ২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে- এই মাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়।

এছাড়াও, সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২ দশমিক ০৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ২৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশকালে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও জাতীয় মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক উঠে আসায় এবং বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেলের সংখ্যা ক্রমাগত ভাবে বৃদ্ধি ও বেপরোয়া চলাচল সড়ক নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাড়াঁচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগত ভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহীতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যাতিরেকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।