শিপ্রার মামলা নেয়নি কক্সবাজার সদর থানা

প্রকাশিত: ৭:১৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : ফেসবুকে অপপ্রচারের অভিযোগে মামলা করতে যাওয়া শিপ্রা দেবনাথের মামলা গ্রহণ করেনি কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে শিপ্রা দেবনাথ ও সিফাত আইনজীবীসহ মামলা করতে আসেন।
শিপ্রার আইনজীবী এডভোকেট মাহবুবুল হক টিপু বলেন, ‘তাদের রামু থানা ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ সময় শিপ্রা ও সিফাত উপস্থিত থাকলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন কথা বলেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিপ্রার মানসিক অবস্থা ভালো নেই। তাই তিনি এই মূহুর্তে কথা বলবেন না।’

ফেসবুকে ব্যক্তিগত ছবি প্রকাশ করায় সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এবং পিবিআই’র এসপি মিজানুর রহমান শেলিসহ অজ্ঞাত প্রায় দেড়শ জনের বিরুদ্ধে মামলা করতে যান শিপ্রা দেবনাথ।

এর আগে ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে পোস্টকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করবেন বলে জানান শিপ্রা দেবনাথ।

নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদের সহযোগী ও রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ নিজেই সোমবার একটি বেসরকারি চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন।

শিপ্রা দেবনাথ বলেন, ‘আমি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অষ্টম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত এবং ফ্রিল্যান্সার মিডিয়া কর্মী। আজ একটি নৃশংস ঘটনা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী আমাদের গর্ব। অথচ ৩১ জুলাই রাতে এই বাহিনীর কুখ্যাত ওসি প্রদীপ ও তার সহচর ইন্সপেক্টর লিয়াকত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে।’

পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে শিপ্রা বলেন, ‘মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর রাতে এসে আমাদের কটেজ থেকে পুলিশ আমাদের দুটি মনিটর, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ক্যামেরা, লেন্স, ৩টি হার্ডড্রাইভ ও আমাদের ফোন ডিভাইস সব নিয়ে যায়। জব্দ তালিকায় যার কোনটির উল্লেখ নেই। আমি জানি না, এখন কীভাবে বা কার কাছে সেসব ফেরত চাইব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পার্সোনাল প্রোফাইল ও ডিভাইস থেকে বিভিন্ন ছবি চুরি করে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের দায়িত্বশীল অফিসাররাই ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। আমার নামে খোলা হয়েছে ফেক ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম আইডি। আমার ব্যক্তি জীবনকে যারা অসহনীয় করে তুলেছেন বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও তৈরির মাধ্যমে, তাদের প্রত্যেকের জন্য আমি তথ্য প্রযুক্তির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, কথা দিলাম।’

‘আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে এভাবে আমার ব্যক্তিগত জীবনকে নিগৃহীত করার প্রচেষ্টা এ বাংলাদেশের আইনে কি শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়? আমি সমস্ত পুলিশ বাহিনীকে দায়ী করছি না। এখানে অনেক সৎ অফিসার রয়েছেন। কিন্তু এরূপ হত্যাকারী কর্মকর্তা এবং একজন নারীকে সামাজিক মাধ্যমে বিকৃত ভাবে উপস্থাপনকারী অসুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন কিছু পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনা হলে, এই কলঙ্কের দায়ভার জাতি সম্পন্ন বাহিনীর উপর ন্যস্ত করবে।’

শিপ্রা দেবনাথ আরও বলেন, ‘একজন মানুষ হত্যাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার টুঁটি চেপে ধরে আমাকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দিলে লাখো তরুণ-তরুণী এর প্রতিশোধ নেয়া থেকে নিশ্চয়ই বিরত থাকবে না।’