হালুয়াঘাটে পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক শহীদ পরিবারে সদস্যকে মারধরের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২০
হালুয়াঘাটে পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক শহীদ পরিবারে সদস্যকে মারধরের অভিযোগ

জোটন চন্দ্র ঘোষ,হালুয়াঘাট : ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ হাকিম উদ্দিনের পুত্র রুহুল আমিনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে হালুয়াঘাট থানার এএসআই আজম খানের বিরুদ্বে। গত সোমবার (২ মার্চ) দুপুরে ধুরাইল ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামে মারধরের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের হাবিবুর রহমান হবী ও মফিজ উদ্দিনের (চাচা-ভাতিজা) উভয় পক্ষের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। তার ধারাবাহিকতায় গত ২ মার্চ সকালে ধুরাইল ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হবি ৯৯৯ এ কল করে জমি সক্রান্ত ঘটনায় পুলিশের সাহায্য চান। পরে ৯৯৯ থেকে হালুয়াঘাট থানা পুলিশকে অবগত করা হলে খবর পেয়ে হালুয়াঘাট থানার এএসআই আজম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। সম্প্রতি ধুরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ারিছ উদ্দিন সুমন সালিশ দরবারের মাধ্যমে চাচা ভাতিজার বিরোধ নিস্পত্তি করে উভয়ের সীমানা নির্ধারণ করে দেন। নিজের জমিতে পাকাঘর নির্মাণ করার সময় এএসআই আজম খান উভয় পক্ষকে বাধাঁ নিষেধ করেন।

এ ঘটনায় স্থানীয় মাতাব্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ পরিবারের সন্তান রুহুল আমিন মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলার জন্য উক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে অনুরোধ করলে এই পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্লীলভাষায় গালিগালাজ করে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের এই নেতাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে থানায় আনারও চেষ্টা করেন। পরে উপস্থিত স্থানীয় ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য আফিনা বেগম উক্ত নেতাকে নিজ হেফাজতে পুলিশের হাত থেকে ছাড়িয়ে রাখেন।

বিষয়টি জানতে চাইলে ভূক্তভোগী রুহুল আমিন অশ্রুসিক্ত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, বিনা অন্যায়ে এএসআই আজম তাকে মারধর করেছেন। তিনি বিষয়টি উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্ধসহ স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করে এই পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবী করেন।

এ বিষয়ে এএসআই আজম বলেন, তিনি মারধর করেননি। তার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি ৯৯৯ এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ওয়ারিছ উদ্দিন সুমন বলেন, উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা তার নাম শুনার পর তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। চাচা ভাতিজার বিরোধটি তিনি সম্প্রতি সমাধান করে দিয়ে ছিলেন। কিন্ত মিথ্যা তথ্য প্রদান করে ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে শহীদ পরিবারের সন্তান ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদককে মারধর করায় তিনি নিন্দা জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে শাস্তির দাবী জানান।

ঘটনাটি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ থানায় নব-যোগদানকৃত ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদকে অবগত করে তাৎক্ষণিক উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কবীরুল ইসলাম বেগ,সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ, যুগ্ম সম্পাদক মোরর্শেদ আনোয়ার খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম,ধুরাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকসহ শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্ধ সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সিদান্ত গ্রহণ করেন,যে শহীদ পরিবারের সন্তান ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনকে মারধর করার অপরাধে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে শাস্তির দাবী করেন।

এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্ধসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন। বর্তমানে উক্ত এএসআই ছুটিতে রয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে সিদান্ত গ্রহণ করবেন সেটিই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান।