ভালুকায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ৩কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলের চেষ্টা

প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০

ভালুকা (ময়মনসিংহ) থেকে তমাল কান্তি সরকার : ময়মনসিংহের ভালুকায় আদালতের নিষেধ অমান্য করে নিরিহ প্রায় ১০ জন কৃষকের ৩ কোটি টাকা মূল্যের ৪৫ বিঘা জমি ক্রয় না করেই জোরপূর্বক উপজেলার ভরাডোবা মূলতাজিম স্পিনিং মিলের নামে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ভোক্তভোগি কৃষকরা আদালতে গিয়ে ওই জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভরাডোবা এলাকার মুলতাজিম মিল কর্তৃপক্ষ আরো একটি কারখানা স্থাপনের জন্যে গত ২৯ জানুয়ারী বিকেলে তাদের কারখানা এলাকায় লোকজন দিয়ে সীমান প্রচীর নির্মান শুরু করে। ওই সময় স্থানীয় কিছু নিরিহ কৃষক জমির মালিকানা দাবি করে মুলতাজিম কারখানা কর্তৃপক্ষের সীমানা প্রাচীর নির্মান কাজে বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনকার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পুনরায় বৃহ¯প্রতিবার ১৮ ফেব্র“য়ারী সকালে নির্মাণ কাজ শুরু করার পায়তারা করলে স্থানীয়দের বাঁধার মুখে নির্মাণ কাজ করতে পারেনি মিলকর্তৃপক্ষ। হারুন অর রশিদ, আতিকৃল ইসলাম, শাহ্ আলম তরফদার, আলী হোসেন, খলিল মিয়া, ওলি উল্যাহ ও সাইফুল ইসলাম সহ একাধিক কৃষকের জমি ক্রয় না করেই সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রায়তারা করে যাচ্ছে। এঘটনায় হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন মামলা নং- ১২৫/২০২০, শাহ্ আলম তরফদার বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন মামলা নং- ১২৩/২০২০, আতিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন মামলা নং- ১৫৯/২০২০।

উপজেলা ধলীয়া দেয়ালীয়াপাড়ার সূর্যত আলীর ছেলে হারুন মিয়া জানান, তার এবং তার বাবার এক একর ৪০ শতাংশ জমি না কিনেই ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে জবরদখলের করা জন্যে সীমানা প্রাচীর নির্মান শুরু করে মুলতাজিম মিল কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাটি ভালুকা মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে ওই ঘটনায় আদালতে মামলা করা হলে আদালত ওই জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম তরফদার বলেন, ‘মুলতাজিম কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত মিল এলাকায় তার নিজেরসহ অন্যান্য কৃষকের কমপক্ষে ১৫ একর জমি রয়েছে। অথচ ওই জমি না কিনেই জবরদখলের উদ্দেশ্যে সীমানা প্রাচীর নির্মান শুরু করে মুলতাজিম মিল কর্তৃপক্ষ। তিনি আদালতের স্মরনাপন্নœ হলে আদালত ওই জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেন।

মুলতাজিম স্পিনিং মিলের মালিক আলহাজ্ব আব্দুস সালাম জানান, আমি কারো জমির উপর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছি না। আমার ক্রয়কৃত জমিতেই নির্মাণ কাজ করতে গেলে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কাজ বন্ধ রেখেছি।

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, সীমানা প্রাচীর নির্মানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে, আইন শৃংখলা পরিস্থিত অবনতির আশংকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আপাতত কাজ বন্ধ রেখে দুই পক্ষকেই শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। আদালত জমির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। হারুন মিয়া ও শাহ আলমের আবেদনের ভিত্তিতে আদালতের দেওয়া ১৪৪ ধারা নোটিশ জারী করা হয়েছে।

উপজেলা নিরবাহী কর্মকর্তা মাসুদ কামাল জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে এবং মিল কর্তৃপক্ষকে কৃষকের সাথে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।