হালুয়াঘাটে মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবায় সকলের আস্থা জয়রামকুড়া হাসপাতাল

প্রকাশিত: ১:৪১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২০

জোটন চন্দ্র ঘোষ,হালুয়াঘাট : ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশ ঘেঁষা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার জুগলী ইউনিয়নে অবস্থিত জিবিসি-খ্রীষ্টিয়ান হেলথ্ প্রজেক্ট জয়রামকুড়া হাসপাতাল। উক্ত হাসপাতালটি বিগত ১৯৬৪ সনে ১৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা করা হয়।

তৎকালীন সময়ে উক্ত হাসপাতালটি অষ্ট্রেলিয়ান মিশনারী ডাক্তার বর্ডেন উদ্বোধন করেন। বিদেশী মিশনারী দাতা সংস্থার অর্থায়নে প্রায় ৫৫ বছর পূর্বে অত্র এলাকার আদিবাসীসহ ক্ষদ্র-নৃ গোষ্টির অসহায় ব্যক্তিদেরসহ স্থানীয় সর্বসাধারণকে স্বল্প মূল্যে ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বল্প সময়ে স্বাস্থ্য সেবায় প্রতিষ্ঠানটির সুনাম দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়লে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচিতি। উপজেলার প্রায় তিন লক্ষ লোকের স্বাস্থ্য সেবার আস্থার প্রতীক এই প্রতিষ্ঠানটি।

বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগীগণ। মাত্র দশ শয্যা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পথ চলা শুরু করলেও বর্তমানে রয়েছে পঞ্চাশ শয্যা। প্রতিদিন বর্হি বিভাগে ও অর্šÍ বিভাগে প্রায় ২শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। যার ৮০ শতাংশই মা ও শিশু। মা ও শিশু স্বাস্থ্যের সুচিকিৎসায় অভিনব সাফল্য অর্জন করেছেন প্রতিষ্ঠানটি। চিকিৎসা সেবায় প্রতিষ্ঠানটির অভিনব সাফল্যের পেছনে রয়েছেন ডাক্তার লুসি ও ডাক্তার তাপস রেমা অসাধারণ কৃতিত্ব। তারা উভয়ে স্বামী স্ত্রী সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন।

স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি জয়রামকুড়া জিবিসি-খ্রীষ্টিয়ান হেলথ্ প্রজেক্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এর যৌথ উদ্যোগে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এর ডিল্পেমা ইন মিড্ওয়াইফারী তিন বছর ব্যাপী কোর্সে ১০ জন ডাক্তার প্রতি ব্যাচে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে সনদ পত্র প্রদান করেন। পাশাপাশি নার্সিং কোর্সে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে তিন বছর ব্যাপী কোর্স এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীগণ কোর্স সম্পন্ন করে বিভিন্ন হাসপাতালে চাকরী করে নিজেদের বেকারত্ব লাগব করছেন ও অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

এ ছাড়াও স্থানীয় এলাকার ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্টির অসহায় হত দরিদ্র পরিবারের সদস্যসহ জনসাধারণের মাঝে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটারির বিধি মোতাবেক আর্থসামাজিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প সহায়তা প্রদান করছেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে সর্বমোট কর্মচারী রয়েছে ১৯৪ জন।

প্রতিষ্ঠানটির এই সাফল্যের পিছনে যার রয়েছে শ্রেষ্ট অবদান তিনি হলেন জেবিসি-খ্রিষ্ট্রিয়ান হেলথ্ প্রজেক্ট জয়রামকুড়া হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক তরুন দারিং। তিনি ২০১২ সনের ১ জানুয়ারি উপ-পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদান করেন। পরবর্তীত্বে ২০১৫ সনের ১ জুলাই নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।

জরাজীর্ণতার বাঁধ পেরিয়ে আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নতুন উদ্যামে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আর নির্বাহী পরিচালককে সর্বিক ভাবে সহযোগিতা করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটির অর্থ ব্যবস্থাপক অঙ্কুর ভৌমিক তিনি বলেন,দাতা সংস্থা সমুহের দানের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ায় হাসপাতালটির উন্নয়নে সাময়িক সমস্যা দেখা দিয়েছে। দাতা সংস্থা সমুহের নিকট অসহায় হতদরিদ্র জনগোষ্টির পক্ষ থেকে সুচিকিৎসা প্রদানের জন্য সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

উন্নত চিকিৎসা সেবা পেতে হালুয়াঘাট পৌরশহরের উত্তর বাজার থেকে অটোরিক্সা, রিক্সা ও মটর সাইকেল দিয়ে যাওয়া যায়। অটোরিক্সা দিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় লাগবে ও ভাড়া ১০ টাকা নিতে পারে। রিক্সা দিয়ে গেলে ২০ মিনিট সময় লাগবে ও ভাড়ার পরিমান ২০টাকা থেকে ২৫টাকা টাকা হবে। মা ও শিশুদের সুচিকিৎসা সেবার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান জিবিসি-খ্রীষ্টিয়ান হেলথ্ প্রজেক্ট জয়রামকুড়া হাসপাতাল।