বিদেশে অর্থ পাচারে উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত দেশবাসী

প্রকাশিত: ৫:৪১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার : বিদেশে অর্থ পাচারের ফলে দেশে চলমান উন্নয়নের সুফল থেকে দেশবাসী বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে বিদেশিদের কর্মসংস্থান : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণাপত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স বিদেশে যাচ্ছে এবং অবৈধভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে তা খুবই উদ্বেগজনক। দেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। তবে বিদেশে অর্থ পাচারের ফলে এ উন্নয়নের সুফল দেশবাসী পাচ্ছেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এর আগেও একটি গবেষণা করেছিলাম। সেখানে দেখা গেছে, যে ছয়টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের কোনো টাকা লাগে না- সেখানেও ভিসা করাতে বছরে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লেনদেন হয়। বাংলাদেশে যারা বৈধ ও অবৈধভাবে কাজ করছেন তারাও বছরে ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করছেন। বিদেশি নিয়োগে দেশে কোনো নিয়মকানুন মানা হয় না। বিদেশি নিয়োগের পূর্বশর্ত হলো ওই কাজের জন্য দেশে যোগ্য কেউ আছে কি না খোঁজ করা। তবে আমাদের নিয়োগকর্তারা আগে থেকেই বিদেশি নিয়োগের জন্য মনস্থির করেন।’

‘বৈধভাবে বিদেশি নিয়োগে সাতটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এর মধ্যে স্থানীয় নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনঃবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করতে হয়। বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ), বেপজা (রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ), এনজিও ব্যুরো থেকে ভিসার সুপারিশপত্র নিতে হয়। বাংলাদেশ মিশনে ভিসার আবেদন করতে হয়। নিরাপত্তা ছাড়পত্রের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনএসআই ও এসবিতে আবেদন করতে হয়। বিডা, বেপজা, এনিজিও ব্যুরোতে কাজের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়। ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন সংগ্রহ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় এবং ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরে আবেদন করতে হয়। অবৈধভাবে বিদেশি কর্মী নিয়োগে এত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় না। এক্সপার্টের সঙ্গে বিদেশে থেকেই যোগাযোগ করে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে আসেন এবং কাজ করেন। সাধারণত বাংলাদেশে তিন মাসের ভ্রমণ ভিসা দেয়া হয়। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে ওই কর্মী আবার স্বদেশে ফিরে যান এবং ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করেন’- বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

বাংলাদেশে মোট ২১ ধরনের বিদেশি কর্মী রয়েছে। এদের মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প, টেক্সটাইল, বায়িং হাউস, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, তেল গ্যাস কোম্পানিতে লোকজন বেশি কাজ করছে বলে জানায় টিআইবি।