চিতলমারীতে ৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই!

প্রকাশিত: ২:২২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২০

বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে শহীদ মিনারের বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে যত সহজে শিশুদের বিষয়টি অবগত করানো যায় অন্য কোন উপায়ে তা সম্ভব নয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় দেশের শিশুদের শিক্ষা জীবনের প্রথম ধাপ।

এখানেই শিশু শিক্ষা, শিষ্টাচার, শ্রদ্ধাবোধ, দেশপ্রেম ও জীবন গঠনের প্রাথমিক্র জ্ঞানলাভ করে থাকে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতী শিক্ষার্থী শিশুদের মধ্যে ভাষা আন্দোলনের চেতনা জাগ্রত করতে শহীদমিনারের গুরুত্ব অন্যতম।

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পরেও অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নেই। ফলে ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস ও তাৎপর্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এখানকার কোমলমতী শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় শুধু মাত্র ২১ ফেব্্রুয়ারীর দিনটিতে কোথাও কোথাও অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় ১১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ২১টি বিদ্যালয়ে। ৯০ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মিলন জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ নির্মাণের নির্দেশনামূলক কোন চিঠি আমাদের দেয়নি। নৈতিকভাবে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকি। কিছু কিছু স্কুলে স্লিপ ফান্ডের টাকা দিয়ে শহীদ মিনার নির্মান করেছে। আগামী মাসিক মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের অভিযোগ, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যখন পরিচালনা কমিটি গঠনে ভোট হয় তখন প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীরা স্কুলের উন্নয়নের জন্য নানা রকম কথা দেন। নির্বাচন শেষে তারা কিছুই করেন না। কমিটির সদস্যরা বলেন, সরকারী বরাদ্দ নেই শহীদ কি ভাবে নির্মান করবো। সব কিছুতেই সরকারী বরাদ্দের অপেক্ষা। কেন সরকারী বরাদ্দ ছাড়া কি এসব কাজ স্থানীয় ভাবে নির্মান করা যায়না? তারা বলেন অবশ্যই নির্মান করা যায়। কিন্তু কমিটির লোকজন করেননা। তারা শুধু সরকারী বরাদ্দ বরাদ্দ করে। অনেকে জানায়, সীমানা প্রাচীরগুলোতে জ্ঞান গর্ব কোন উক্তি লিখা হয়না।

চিতলমারীর বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে ¯পষ্ট নয় শহীদ মিনার বা ভাষা দিবসের তাৎপর্য। পর্যবেক্ষনে দেখা গেছে,উপজেলার স্থানীয় নামিদামী কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতেও শহীদ মিনার নেই। অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করেই শহীদ দিসব পালিত হয় সেখানে।