গৌরীপুরে পিঠা উৎসব

প্রকাশিত: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০

কমল সরকার,গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ‘পৌষ পার্বণে পিঠা খেতে বসি খুশিতে বিষম খেয়ে/ আরও উল্লাস বাড়িয়াছে মনে মায়ের বকুনি পেয়ে…।’ কবি সুফিয়া কামাল তাঁর কবিতায় গ্রাম-বাংলায় কিশোর বয়সে পিঠা খাওয়ার আনন্দ তুলে ধরেছেন এইভাবে। পিঠার নাম শুনলেই জিভে জল আসে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। পিঠা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শীত এলেই পিঠার স্মৃতি মানুষের মনের ভেতরে নাড়া দিয়ে যায়। নারীদের হাতে তৈরি পিঠার সেই নান্দনিক পরিবেশনা আমাদের সংস্কৃতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এখন নাগরিক নানা ব্যস্ততায় নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের পিঠার সঙ্গে পরিচয় নেই বললেই চলে। তাই গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে

ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরে সাদেক মেমোরিয়াল কিন্ডার গার্টেন এন্ড স্কুলে প্রতিবছর আয়োজন করা হয়ে থাকে পিঠা উৎসব। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০ টায় এ পিঠা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, ইউএনও সেঁজুতি ধর, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিকা পারভীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

সকাল থেকে এ পিঠা উৎসবের স্টলগুলোতে ছিল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, স্থানীয় লোকজনসহ কিশোর-কিশোরীদের উপচেপড়া ভীড়। স্টলগুলোতে ছিল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শতাধিক পিঠার সমাহার। স্টলগুলোতে সাজানো ছিল বিবিয়ানা, হৃদয় হরণ, মতিচোর, লবঙ্গ, প্রোটিন, দোল্লা, মেরা, চিতই, নকসী, গোলাপ কলি, দুধপুলি, নারিকেল, ডিমপাকন, সাজনকসী, ডিমসুজি, সাজ, গুলি, ঝিনুক, মালপোয়া, লাডু, সিরিজ, মাংস রুটি, ভাপা, দুধ চিতই, পাঁপড়ী, খেজুর, সমেচা, মসলা, তেজপাতা, রসপাকন, পাটিসাপটা, ফুল, খাজা, বিস্কুট, চেপা, কেক, নকসী, পাক্কন, তেহুরী, রাজদোল্লা, মড়ল লাঠি, কলার সেমাই, শালুকপাতা, ঝাল, তাল, বেনী, খিলী, মাছ, মিষ্টি জাম, কামরাঙ্গা, নৌকা, পাতা

বাহারসহ নানা রকমের পিঠা। পিঠা উৎসবে এসব বাহারি পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেন ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের নারী অভিভাবকরা।

সাদেক মেমোরিয়াল কিন্ডার গার্টেনের পরিচালক পৌর কাউন্সিলর মোঃ আব্দুল কাদির বলেন বাঙ্গালির ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিভিন্ন ধরনের পিঠা সম্পর্কে পরিচিতির জন্যই তাদের এ আয়োজন। প্রতিবছর জানুয়ারী মাসে তারা এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে থাকেন।