সাংসদ নারায়ণ চন্দের জামাতা প্রভাষ দত্তকে হত্যা চেষ্টার রহস্য ১৩ মাসেও অন্ধকারে! তদন্তে নেমেছে পিবিআই

প্রকাশিত: ১:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০

আতিয়ার রহমান,খুলনা : খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের জামাতা প্রভাষ কুমার দত্ত (৫০) কে গুলি করে হত্যা চেষ্টা মামলার ১৩ মাস পার হলেও রহস্য অন্ধকারেই রয়ে গেছে ঘটনাটি প্রশ্ন সাধারন মানুষের মনে। কে বা কারা, কি কারনে তাকে হত্যা করতে গুলি চালিয়েছিলো তা আজও স্পষ্ট হয়নি ঘটনাটি!

এদিকে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে থানা পুলিশের তদন্তে থাকা এ মামলাটি চলতি বছরেই নতুন তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শুরু করেছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র খুলনা জেলায় কর্তব্যরত উপ-পরিদর্শক নয়ন চট্টোপাধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন। এর আগে ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে ওই আসনের সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরোয়ারের ভাইসহ কারাগারে থাকা সন্দেহভাজন ৪ জনকে শ্যোন এরেস্ট’র আবেদন করে পুলিশ। আদালত পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করলেও তাদের মধ্যে কেউ এ হত্যাকান্ডের বিষয়ে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে জবানবন্দি দেননি। তারা ৪ জনই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

শ্যোন এ্যারেস্ট হওয়া সন্দেভাজন আসামিরা হলেন, খানজাহান আলী থানাধীন শিরোমনি পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে শেখ শাহাবুদ্দিন ওরফে সিহাব (৪৫), একই এলাকার মৃত শেখ মহসিনের ছেলে শেখ হুমায়ুন কবির (৩৫) ও শিরোমনি দক্ষিণপাড়ার মিয়া আব্দুল হামিদের ছেলে ও মিয়া গোলাম পরোয়ারের ভাই মিয়া গোলাম খায়ের (৫০)। এছাড়া ডুমুরিয়া উপজেলার আরাজি সাজিয়ারা এলাকার আব্দুল আজিজ সরদারের ছেলে মোঃ মনির আহমেদ সরদার (৪৫) কে গ্রেফতার করা হয়।



উল্লে¬¬খ্য, ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে প্রভাষ কুমারের নিজ বাসায় ঢুকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে পালিয়ে যায়। প্রভাষের ডান দিকের পেটে গুলি লেগে গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ১ ডিসেম্বর প্রভাষ নিজে বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন (নং-০১)। দন্ডবিধির ৪৪৮, ৩২৬, ৩০৭, ৩৪ ও ১০৯ ধারায় মামলাটি রুজু হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের জামাতা প্রভাষ বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা শাখার ডিজিএম হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার পিতার নাম চিত্তরঞ্জন দত্ত। সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন বকশিপাড়ার নিজস্ব বাড়িতে তিনি বসবাস করেন।

এ ঘটনার কিছুদিন পূর্বে তার স্ত্রী জয়ন্তী রাণী চন্দ ওরফে বেবী অর্থাৎ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের কন্যার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যু সম্পর্কে কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। জয়ন্তী রাণী এমপির একমাত্র কন্যা ছিলেন। এছাড়া তার তিন পুত্র রয়েছে। এদিকে আবার ও সেই আলচিত খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ছোট ছেলে অভিজিৎ চন্দ্র চন্দ (২৫) হারপিক পান করে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার রাত ১০টার দিকে স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের চিকিৎসকরা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে হেলিকপ্টার যোগে বিকালে ঢাকায় নেয়া হয়।

পরিবার সূত্র জানিয়েছে, বেলা সাড়ে ১১টায় তাকে খুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তিনি খুলনার ডুমুরিয়ায় গ্রামের বাড়িতে বসেই সকালে হারপিক পান করেন। তবে কী কারণের তিনি হারপিক পান করেন, আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তা জানা যায়নি গত বুধবার তার ছোট পুত্র অভিজিৎ চন্দ্র চন্দ হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা কৌতূহল ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।