১২বছর দঁড়িতে বাধা রাণীনগরের ভারসাম্যহীন যুবক সুজন দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৫:১৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২০ নাজমুল হক নাহিদ, নওগাঁ প্রতিনিধি: জন্মের ২৫বছরের মধ্যে প্রায় ১২বছর ধরে দঁড়িতে বাধা রয়েছে সুজন আলী নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক। অর্থের অভাবে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ৬নং কালীগ্রাম ইউনিয়নের করজগ্রামে দঁড়িতে বাধা সুজনের ভাগ্যে জোটেনি উন্নত মানের চিকিৎসা। তাই বাধ্য হয়েই সুজনের পরিবারের সদস্যরা তাকে দঁড়িতে বেধে রেখেছে বাড়ির বারান্দায়। দিন যতই যাচ্ছে ততই সুজনের পাগলামীর পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটির বাড়ির বারান্দার বাঁশের সঙ্গে হাতে মোটা দঁড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে সুজনকে। হাতে দঁড়ি বাধা অবস্থায় এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে সুজন। আগে একটু কথা বলতে পারলেও বর্তমানে তেমন কোন কিছুই আর বলতে পারে না সুজন। করজগ্রামের কৃষক মৃত- লিতব আলী মন্ডলের ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন সুজন। নয় ভাই-বোনের মধ্যে সুজন ৬ষ্ঠ ছেলে। শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমেও সুজনের একমাত্র আশ্রয়স্থল বাড়ির এই উঠান। হাতের দঁড়ি খুলে দিলেই সুজন রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারীদের ধাক্কা দেয়। এছাড়াও অনেক দুর্ঘটনা ঘটায় সুজন। তাই সুজনের এই সব অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় হাতে দঁড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে তাকে। সুজনের মা রিজিয়া বেওয়া বলেন জন্মের পর থেকে সুজনের মাঝে কিছুটা অস্বাভাবিক আচার-আচরন ধরা পড়তো। তবে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাগলামী আচরন বৃদ্ধি পাওয়ায় ওর বাবা বেঁচে থাকতে জমি-জমা বিক্রয় করে সাধ্যমতো চিকিৎসা করার চেষ্টা করেছে। তখন পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সুজন কোনদিন ভালো হবে না বলে কিছু ওষুধ প্রদান করে সেখানকার চিকিৎসকরা। সেই ওষুধগুলো খাওয়ার পর সুজনের আচরনের আরো অবনতি হলে আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু প্রায় ১০বছর আগে ওর বাবার মৃত্যুর পর সুজনের ভাগ্যে অর্থের অভাবে আর কোন উন্নত মানের চিকিৎসা জোটেনি। কারণ আমার স্বামীর মৃত্যুর পর সুজনের ভাইয়েরা আলাদা বসবাস শুরু করে। দিন যতই যাচ্ছে ততই সুজনের আচরনের আরো অবনতি হচ্ছে। সম্প্রতি সুজন প্রতিবন্ধি ভাতার আওতায় এসে কিছু টাকা ভাতা হিসেবে পেলেও তা ওর চিকিৎসার জন্য তা যথেষ্ট নয়। তাই সরকারি ভাবে যদি কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে সুজনের উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হতো। সুজনের বড় ভাই আজিজুল ইসলাম বলেন সুজনের চিকিৎসার জন্য আমরা অনেক টাকা খরচ করেছি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের তেমন সামর্থ নেই। তাই সুজনের জন্য উন্নত মানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছি না। যদি সরকারের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা করে তাহলে আমার ভাইয়ের উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হতো। হয়তো বা উন্নত চিকিৎসা পেলে সুজন ভালো হয়ে উঠতে পারে। কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল বলেন সুজনের বিষয়ে আমি তেমন কিছুই জানতাম না। তবে আমি বর্তমানে সুজনের উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার পরিষদ ও নিজের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। এছাড়াও আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে সুজনের বিষয়টি জানাবো। আশা করি তারাও সুজনের জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন ইতিমধ্যে আমরা জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার কয়েকজন এরকম মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তেমনি ভাবে দ্রুত আমি নিজে সুজনের বাড়িতে গিয়ে তার সর্বশেষ অবস্থা জেনে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সুজনের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবো। Share this:FacebookX Related posts: রাণীনগরে শীতার্তদের মাঝে যুবলীগের শীতবস্ত্র বিতরন রাণীনগরে মুজিব জন্মশত বার্ষিকী স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা রাণীনগর মহিলা অনার্স কলেজে ৪তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নবীন বরণ আত্রাইয়ে শীতার্তদের পাশে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক রাণীনগরে ৬ জুয়াড়ির অর্থদণ্ড রাণীনগরে বসন্ত উৎসব উদযাপন রাণীনগরে সড়কের সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ: চরম দুর্ভোগে পথচারী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় ভাতাভোগী বাছাই কার্যক্রম উদ্ধোধন রাণীনগরে করোনা সন্দেহে চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন যুবক পুলিশ সুপারের উদারতায় ঠাঁই পেলো শিশুটি রাণীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদক পুনঃনির্বাচিত পাবনায় প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ SHARES Matched Content দেশের খবর বিষয়: ১২বছরদঁড়িতে বাধাভারসাম্যহীনযুবকরাণীনগরসুজন