‘ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের কোন প্রয়োজন ছিল না’

প্রকাশিত: ১২:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এটির কোন প্রয়োজন ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে গালফ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদপত্রটির অনলাইন সংস্করণে শনিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

গত ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আবুধাবিতে গালফ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এটি জরুরি কোন বিষয় নয়। আমি বুঝতে পারছি না, কেন এটা করা হল।’ তিনি বলেন, ‘ভারতে পাড়ি দেয়া কেউ বাংলাদেশে ফিরে এসেছে এমন নজির নেই। এছাড়া ভারত নিজেই নানা সমস্যায় রয়েছে। নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ব্যক্তিগত ভাবে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন।’ শেখ হাসিনার মতে, বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সর্বোচ্চ সুসম্পর্ক রয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে ভারত বাংলাদেশকে সহায়তা করছে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কটের শুরু মিয়ানমারে। তাদের কাছেই এর সমাধান রয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। এখন পর্যন্ত দু’বার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও কোন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় সেখানে যেতে চায়নি। ফলে বাংলাদেশের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমার আসলে প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে।’ মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে, আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সরকারের নানা উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন। বাংলাদেশ কয়লা বিদ্যুতের দিকে মনোযোগ বাড়ালেও এক্ষেত্রে পরিবেশের সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ এতদিন গ্যাসের ওপর নির্ভর করত। কিন্তু গ্যাস ফুরিয়ে আসায় উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে এখন কয়লাসহ অন্য উৎসের দিকে নজর দিতে হচ্ছে।’ বিশাল জনসংখ্যার দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর চাপ বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেই সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কীভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, তাও গালফ নিউজকে তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। শতভাগ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।