পটিয়ায় ৩৪ বছর পর মাওলানা মাবুদের মাদ্রাসা এম.পি.ও হল

প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২০

পটিয়া (চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : কথায় আছে পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করেছে মাওলানা আবদুল মাবুদ ইসলামাবাদী। ৩৪ বছর পর তার প্রতিষ্ঠিত পটিয়া ভাটিখাইন মির্জা আলী লেদু শাহ্্ (রহঃ) দাখিল মাদ্রাসা এম.পি.ও ভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে। গত ২০১৯ সালের ২৩ শে অক্টোবর এম.পি.ও ভুক্তির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হলেও কয়েকদিন আগে এম.পি.ও ভূক্ত এর অনুমোদনের কপি তার হাতে এসেছে।

তার মাদ্রাসাটি এম.পি.ও ভূক্ত হওয়ার পেছনে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এম,পি, জমিয়তুল মোদারের্ছীনের সভাপতি এ. এম. বাহ্্উদ্দীন ও মহাসচিব সাব্বির আহমদ মোমতাজীর অবদানের কথা তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এম,পি’র আন্তরিক প্রচেষ্টা ও জমিয়তুল মোদারের্ছীনের দুই নেতার ভূমিকা না থাকলে মাদ্রাসাটি এম.পি.ও ভূক্তিতে আরও কয়েক বছর পিছিয়ে যেত। তিনি বলেন ১৯৮৬ সালে এ মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করার পর মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক সংগ্রহে তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।

তিনি বাড়ী বাড়ী গিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সংগ্রহ করেছে। বিত্তশালী লোকজন থেকে ধান, চাউল সংগ্রহ করে তা বিক্রির পর শিক্ষকের বেতন দিতে হয়েছে। ১৯৮৯ সালে একবার কোরবানীর চামড়া পৌরসদরে নিতে বন্যার কারণে গাড়ী না পাওয়ায় পানির মধ্যে চামড়া মাথায় নিয়ে ২ কি.মি. দূরে পৌর সদরে তাকে যেতে হয়। এ চামড়া বিক্রি করে তিনি শিক্ষকের বেতন দেন। পরবর্তীতে তার পরিশ্রম ও কষ্ট দেখে এলাকার বিভিন্ন বিত্তশালী লোকজন তার পাশে এসে দাঁড়ায়। অতঃপর মাটির ঘর থেকে সেমিপাকা ঘর তৈরি করে সে মাদ্রাসাটি সৃষ্টি করে।

বর্তমানে মাদ্রাসার ৬ তলা ভবনের জন্য সরকার ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৮৫ লক্ষ টাকার কাজের টেন্ডার হলেও আরও ৬০ লক্ষ টাকার টেন্ডার দেওয়ার জন্য ঠিকাদার এখনও কাজ শুরু করেনি। চন্দনাইশ উপজেলার কেশুয়া গ্রামের ছৈয়দ আহমদের পুত্র আবদুল মাবুদ পটিয়া শাহ্্চান্দ আউলিয়া কামিল মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন। তিনি এ মাদ্রাসা থেকে ১৯৯০ সালে কামিল (এম,এ) পাশ করেন। লেখাপড়া করার সময় তিনি ভাটিখাইন নবী সওদাগরের বাড়ীতে থাকতেন। সেখানে এবাদত খানা থাকলেও নামাজ পড়ার কোন মুসল−ী না থাকায় তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে মুসল−ী সৃষ্টি করেন।

এবাদত খানা চালু করার পর মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার কাজে নেমে পড়েন। বর্তমানে তার মাদ্রাসায় ৪৯৬ জন শিক্ষার্থী সহ ১৭ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। মাদ্রাসার পাশাপাশি হেফজখানা, এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। হেফজখানা ও এতিমখানায় ৬০ জন ছাত্রকে প্রতিদিন ৩ বেলা খাওয়ারের ব্যবস্থা করেন। গত ২০১৮ সালে উপজেলা পর্যায়ে তার মাদ্রাসা শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করে।

পটিয়া মির্জা আলী লেদ্ ুশাহ্্ (রহঃ) দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সুপার আবদুল মাবুদ ইসলামাবাদী বলেন আর্থিক ও সামাজিকভাবে অনেক বাঁধাগ্রস্থ হলেও তিনি কোন দিন মনোবল হারাননি। এবার তার স্বপ্ন মাদ্রাসাকে আলিম ও ফাজিলে রূপান্তরিত করে ইংলিশ মিডিয়াম ও কম্পিউটার বিজ্ঞান সহ অর্ফানেন্স ইউনিভার্সিটি হিসেবে গড়ে তোলা। তিনি এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।