প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

প্রকাশিত: ৬:১৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩, ২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাদের এ অবস্থান স্পষ্ট করেন।

একইসঙ্গে রোববার ডাকা অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ জনতাকেও রাস্তায় নামার অনুরোধ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসার সুযোগ আর নেই। ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পার হয়ে গেছে। যখন সময় ছিল, তখন সরকার ব্লক রেইড দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করেছে, নির্যাতন করেছে। আখতার হোসেন, আরিফ সোহেলসহ রাজবন্দিদের কারাগারে রেখে আমরা কোনো ধরনের সমঝোতায় যাবো না।

বিবৃতিতে নাহিদ হাসান বলেন, ১৯ জুলাই আমরা কারফিউ ভঙ্গ করে শাটডাউন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমাদের সে বক্তব্য কোনো মিডিয়ায় প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। সে রাতে আমাকে তুলে নিয়ে নির্মম অত্যাচার করা হয়। শাটডাউন অব্যাহত রাখার ঘোষণার জন্য এবং আন্দোলন প্রত্যাহার ও সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য জবরদস্তি করা হয়।তিনি বলেন, ‘ছাত্রজনতা শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করছিল। সরকার দমনপীড়ন করে সেটিকে সংঘাত ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধ করে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এবার এ রকম পরিস্থিতি হলে কারও জন্যই পরিণতি ভালো হবে না।’

নাহিদ হাসান বলেন, ‘পরবর্তীতে ডিবি অফিস থেকেও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমাদের অনশন ও রাজপথে আন্দোলনের কারণে সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। আমরা এখনো শান্তিপূর্ণ ভাবে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে চাই। আমরা কোনো সহিংসতা, প্রতিহিংসা ও প্রাণনাশ চাই না। নিরাপত্তা বাহিনীকেও এর জন্য সহযোগিতা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রাজপথে দেখা গেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এর দায়ভার নিতে হবে। তবে রক্ত ঝরলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা ন্যায়বিচার ও জীবনের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। কোনো ধরনের দমন-পীড়ন, প্রোপাগান্ডা ও ষড়যন্ত্র করে এ আন্দোলন থামানো যাবে না। জরুরি অবস্থা বা কারফিউ ছাত্র-নাগরিক মেনে নেবে না। শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি চাইলে গুলি ও হামলা করার নির্দেশ বন্ধ করতে হবে। অসহযোগ আন্দোলনের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হবে।’
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে নাহিদ বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান থাকবে, খুনি সরকারকে সমর্থন না দিয়ে ছাত্র-নাগরিকের পাশে থাকুন। সরকার জনগণের বিপক্ষে দাঁড়ালে সেই সরকারের হুকুম শুনতে আপনারা আর বাধ্য নন। ছাত্রদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দিন। আমরা পুলিশ নয় হুকুমের আসামিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাই। নিরাপত্তা বাহিনীকে মিছিলে যোগদানের আহ্বান থাকবে। সবাই শান্তিপূর্ণ ভাবে আজকের বিক্ষোভ ও আগামীকাল থেকে অসহযোগ কর্মসূচি সফল করুন।’