ফরিদপুরে সূর্যমুখী ফুলের হাসিতে আকৃষ্ট করছে মানুষকে

প্রকাশিত: ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : এ যেনু হলুদের গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে গিয়ে দেখা মেলে হাজারো সূর্যমুখী ফুলেরর সমাহার। শীতের হিমবাতাসের দোল খেয়ে সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দয্য উপভোগ করতে। এমন অপরুপ সৌন্দয্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজারো প্রকৃতি প্রেমিকরা।

কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আসছেন, কেউ বা আসছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। ভালো লাগা স্মৃতি ধরে রাখতে নানা ভঙ্গিতে ক্যামেরায় বন্দি হচ্ছেন তারা।
এই মুনোমুগ্ধকর দৃশ্যটি ফরিদপুর শহর তলীর বদরপুর এলাকার বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে। এখানে ৩ একর জায়গাজুড়ে বপন করা হয়েছে বারি সূর্যমুখী-২ জাতের ফুলের বীজ। ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে প্রতিটি গাছে ফুল ফুটতে শুরু হয়।

স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এর চাষ। ফরিদপুর বিএডিসির উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বৈচিত্রময় কৃষির জেলা ফরিদপুর। এ জেলায় প্রায় সবধরণের ফসল উৎপন্ন হয়ে থাকে। সে কারণেই ফরিদপুরে শুরু হয়েছে অধিক পুষ্টিগুন সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুলের চাষ। সূর্যমুখীর তেল কোলেস্টেরল মুক্ত প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী তেল আমাদের শরীরের দুর্বলতা, কার্যক্ষমতা বাড়াতে সূর্যমুখীর ভ‚মিকা অনন্য। যে কোনো তেলের চাইতে সূর্যমুখী তেল দশগুণ বেশী পুষ্টি সমৃদ্ধ। আর সে কারনেই ফরিদপুরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ বলে জানালেন ফরিদপুরের সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন ।

ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় পায় দুইশতাধিক কৃষক চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী ফুলর চাষ করেছেন। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও। আর কৃষকেরা ভাল ফলন আশা করছেন।

গঙ্গাবন্দি এলাকার চাষি গিয়াজ উদ্দিন জানান, অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম, অধিক লাভ হওয়ার কারনে এই ফুলের চাষ করেছি। আর ফুল দেখতে আসা দর্শনার্থীরা আগামীতে সূর্যমুখী ফুল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকেই।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর স‚ত্র জানায়, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তুলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি একর জমিতে ৩০ থেকে ৪০হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৮০ থেকে ৯০হাজার টাকা লভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। দিন দিন চাষীরা ষূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদের দিকে ঝুকছে। এই তেলে কোনো ক্লোস্টোরিয়াল নেই, যে কারনে চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এটা অন্য ফসলের চেয়ে স্বল্প জীবন কাল ও লাভজনক। সে কারনেই সূর্যমুখী ফুল চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে বলে জানালেন জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সূর্য্যমুখীর তেলের মানবদেহের স্বাস্থ্য গুণ অনেক। যে কারনে ভোক্তাদের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে এই তেলে।