রাজাপুরে ৭ জনকে জেল-জরিমানা

প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২০

নিউজ ডেস্কঃ ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালি নদীর রাজাপুর উপজেলার অংশ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ৩ জনকে ১ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জব্দ করা হয়েছে ২ টি বালু উত্তোলনের ড্রেজার ও ২ টি বালু বহনকারী ভলগেট।ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোহাগ হাওলাদার বৃহস্পতিবার ভোর ৫ টায় উপজেলার ৫ নং বড়ইয়া ইউনিয়নের পালট সংলগ্ন বিষখালী নদীতে অভিযান চালিয়ে ঐ তিন জন বালু শ্রমিক আটক করেন।এরা হলেন উপজেলার কৈবর্তখালী গ্রামের জলিল সিকদার (৪২), দক্ষিণ বড়ইয়া গ্রামের শুক্কুর খান (২৫) ও পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠী উপজেলার সোহাগদল গ্রামের মাহাবুব বাহাদুর (৩৯)।এ সময় অবৈধ জাল ব্যবহার করে মাছ আহরোনের দায়ে নলছিটি উপজেলার রাজাবাড়িয়া এলাকার জয়নাল আকনের ছেলে শহীদ আকন (৫৫) নামের এক জেলাকে আটক করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আটকৃত জেলেকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড সহ আটকৃত ৪ জনকে এ দণ্ডাদেশ প্রদান করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।জব্দকৃত ৩ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল ও ১ হাজার মিটার সিনথেটিক নাইলন ফাইবারের তৈরি মনোফিলামেন্ট জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।এসময় ২ টি বালু উত্তোলনের ড্রেজার ও ২ টি বালু বহনকারী ভলগেট আংশিক ধ্বংস করে নিলামে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।এছাড়াও বুধবার সন্ধ্যায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ৩ জনকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে একই ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারা হলেন- উপজেলার পুখরীজনা এলাকার জুলফিকার শরীফের পুত্র মো. রাজিব শরীফ (১৮), আবুবকর শরীফের পুত্র কামাল শরীফ (৪০) ও ঝালকাঠি রুপদিয়া গ্রামের মৃত আশ্রাব আলী হাং পুত্র জসিম হাওলাদার (৪০)।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালীদের দাপটে প্রতিনিয়ত বিষখালী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে নদী। ফলে বাড়ছে নদী ভাঙ্গণের দৃশ্য গৃহহীন হয়ে পড়েছে নদীর পাড়ের বাসিন্দারা। নদী ভাঙণের কবলে পড়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি স্থাপনা ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি।

এদিকে প্রভাবশালীদের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেনা ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা। কয়েকটি ড্রেজার মালিকদের একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকে বিষখালি নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। আর যারা এ কাজ করছে তারা সবাই প্রভাবশালী লোক বলে পরিচিত কাজেই এই অবৈধ কাজ বন্ধ করা খুবই দুরহ ব্যাপার।ভুক্তভোগীরা জানায়, মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালালেও অভিযানের পর যা তাই। বালু সিন্ডিকেট এতই প্রভাবশালী যে কেউ তাদের প্রতিরোধ করতে পারছেনা। রাজনৈতিক লেবাসে তারা এ অপকর্ম করলেও বরাবরই এরা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, তাহলে কি বিষখালী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হবেনা ?এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, যেহেতু বিষখালী নদীর ঝালকাঠি জেলার ৫৫ কিলোমিটার অংশে কোনো বালু মহাল নেই কাজেই জেলার যেখান থেকেই বালু উত্তোলন করা হোক তাই অবৈধ।আমারা প্রতিনিয়ত এ অবৈধ কাজ থেকে বিরত রাখার চেস্টা করছি। এর আগেও এই নদী থেকে বালু উত্তোলনকারীদের ধরে জেল জরিমানা করা হয়েছে। তবে এটা বন্ধ করতে হলে জনগনকে আরো সচেতন ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।