গৌরীপুরে দুস্থদের ২হাজার ৬৮০পিস কম্বল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশিত: ২:০৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২০

কমল সরকার,গৌরীপুর : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শীত মৌসুমে গরীব ও দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ২হাজার ৬৮০টি কম্বল কালো বাজারে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ করেন অচিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম অন্তর। তার ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত কম্বল চাওয়ার কারণেই তাকে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সোহেল রানা পাপ্পু জানান, কালো বাজারে কম্বল বিক্রির বিষয়টি পুরো মিথ্যে ও বানোয়াট। সরকারের দেয়া পরিপত্র অনুযায়ী কম্বল সঠিকভাবে বিতরণ করা হয়েছে।

এ দিকে জানা যায়,২০১৯সালের ১২ডিসেম্বর তারিখে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রেরিত এক পত্রাদেশ অনুযায়ী গৌরীপুর উপজেলায় শীত মৌসুমে গরীব ও দুস্থদের বিতরণের জন্য ৪হাজার ৬শ কম্বল উপবরাদ্দ প্রদান করা হয়। সেই পত্রে ময়মনসিংহ জেলার ১৩টি উপজেলা ও ১০ পৌরসভার মোট বরাদ্দ ৭০হাজার ৮৪০টি পিস কম্বল। জেলা প্রশাসকের পক্ষে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রের শর্তবলীর ৪নং ক্রমিকে প্রতি ইউনিয়ন অন্যুন ৪৬০পিস হারে শীতার্ত দুঃস্থ ও অসহায় জনগণের মধ্যে বিতরণের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

অপরদিকে গৌরীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা স্বাক্ষরিত ১৮ডিসেম্বরের ৬১৮নং বরাদ্দপত্রে অনুযায়ী জানা যায়, ১নং মইলাকান্দা, ২নং গৌরীপুর, ৪নং মাওহা, ৫নং সহনাটী, ৬নং বোকাইনগর, ৭নং রামগোপালপুর, ৮নং ডৌহাখলা ও ৯নং ভাংনামারীর প্রত্যেক ইউনিয়নে ২০০পিস কম্বল, অচিন্তপুর ইউনিয়নে ২২০পিস কম্বল ও সিধলা ইউনিয়নে ১০০পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

অবশিষ্ট ২হাজার ৬৮০টি কম্বলটি প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা জানান,সেগুলোও বিভিন্ন এতিমখান ও দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ডৌহাখলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুল হক সরকার জানান, পত্রে ৪৬০পিস কম্বল বরাদ্দ উল্লেখ আছে। তবে এ ইউনিয়নের জন্য ২০০পিস কম্বল দেয়া হয়েছে। রামগোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন জনি জানান, ২শ পিস কম্বল দেয়ার পর জানা গেছে বরাদ্দ ছিলো ৪৬০পিস। সহনাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানও স্বীকার করেন তার ইউনিয়নে ২শ পিস কম্বল দেয়া হয়েছে।

এ দিকে গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি/২০) উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের কার্যালয়ে সরকারি কম্বল নিতে আসেন চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম অন্তর। কম্বল দিতে অস্বীকৃতি জানালে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ আব্দুল করিমকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিতের অভিযোগে আব্দুল করিম মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম অন্তর গ্রেফতারও হন। চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম অন্তরের দাবী- কালো বাজারে কম্বল বিক্রির বিষয়টি আড়াল করতেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।