নান্দাইলে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে ড্রাগন চাষে

প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২০

নিউজ ডেস্কঃ ময়মনসিংহের নান্দাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাচা ভাতিজার ড্রাগন ফল চাষ দেখে কৃষককের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের মৃত আহম্মদ আলী খানের পুত্র মোখলেছুর রহমান খান ও তারই ভাতিজা মুরাদ খান দীর্ঘদিন যাবত ড্রাগন ফল চাষ করছেন।লাভজনক এই ড্রাগন চাষে মেতে উঠেছেন চাচা-ভাতিজাসহ এলাকার অনেক কৃষক। তবে নান্দাইলে এই দুইজনই প্রথম আমোদপুর গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে ৪০ শতাংশ জমির উপর ১ হাজার ৫৬টি ড্রাগন চারা রোপণ করেন।সরেজমিন দেখা যায়, চার ইঞ্চি স্কয়ার ৬ ফুটের কংক্রিট-সিমেন্টের পিলারের চারদিক ঘিরে ৪টি করে চারা রোপণ করে ২৫৬টি পিলারের মাধ্যমে এর বাগান তৈরি করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের টেকসই মাচা হিসেবে বাঁশের পরিবর্তে গাড়ির পুরাতন টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।প্রতিদিনই ড্রাগন বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকে মোখলেছুর রহমান খানের ভাই বাবুল খান। ড্রাগন অন্য উদ্ভিদরাজির মতোই খাদ্য সংগ্রহ করে। তদুপরি বেশি কিছু নয় প্রাকৃতিক জৈবসার ও কৃত্রিম সার ব্যবহার করা যায়।

তিনি জানান, মোখছেলুর রহমান প্রথমে সৌখিন হিসেবে ধরে নিলেও পরে বাণিজ্যিক চাষাবাদের চিন্তা করে ব্যাপক চারা রোপণ করেন। প্রতিটি চারা ১০০ টাকা থেকে দেড়শ টাকায় ক্রয় করে তা রোপণ করেছেন। তবে উঁচু জায়গা চাষ করলে ভালো হয় কারণ একটি ড্রাগন গাছ প্রায় ৩০-৩৫ বছর ফলন দেয়। চারা রোপণের দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যেই গাছে ফল দেখা দেয়। বছরে একবার ফলন হয়।এপ্রিলের মাঝামাঝি গাছে ফুল দেখা দেয়। তবে সেই ফুল রাতে ফুটে আবার বৃষ্টি হলে নষ্ট হয়ে যায়। তাই সেদিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। জুলাই-আগস্ট মাস হচ্ছে ফল মৌসুম। প্রতি মৌসুমে প্রতিটি গাছে ২০-৩০টি ফল দেয়। প্রতি পিলারের ৪টি গাছ থেকে ২০-৩০ কেজি ফল সংগ্রহ করেন।এই ড্রাগন ফল অনেকটা বিল-ঝিলের শাপলার ভেটের মতো হয়। তবে অনেকটা লাল রঙের। এর ফল খুব সুস্বাদু তবে ওষুধি গুণও রয়েছে। বাজারে এর ভালো দাম রয়েছে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।


চারা উৎপাদন ও ফল রপ্তানির বিষয়ে মুরাদ খান বলেন, গাছের কা- থেকেই এর চারা সহজেই রোপণ করা যায়। বিদেশে এই ফলের বেশ চাহিদা আছে। বাংলাদেশি টাকায় ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা কেজি এই ফল বিদেশে বিক্রি হয়।মোখলেছুর রহমান খান জানান, ড্রাগন চাষ ব্যয়বহুল হলেও লাভজনক। প্রথম এক-দেড় বছর লাভের মুখ দেখা যায় না। তবে ড্রাগন ফল চাষের পাশাপাশি বাগানে অন্য বীরুৎ জাতীয় গুল্ম শস্যাদিও চাষা করা যায়।নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হারুন অর রশিদ জানান, কৃষকরা এরকম নতুন নতুন ফসল চাষাবাদে আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দিয়ে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে চাই।