বিএনপির তিন নেতা ষড়যন্ত্র করতে সিঙ্গাপুরে গেছেন কি-না প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ১২:৫৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সিঙ্গাপুরে গেছেন। এবং আগে থেকেই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে রয়েছেন দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। পরিবার এবং দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন।

তবে আসলেই তারা চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন, নাকি চিকিৎসার নামে ষড়যন্ত্র করতে গেছেন, এমন সন্দেহ প্রকাশ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “দেখলাম বিএনপির তিন নেতা সিঙ্গাপুর গেছেন। পত্র-পত্রিকা লিখছে এটা কি আদৌ চিকিৎসা নাকি আরও কোনো ষড়যন্ত্র করার জন্য তাদের তিন নেতা একই সঙ্গে সিঙ্গাপুর গেলেন। এটি অনেকের প্রশ্ন।”

রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে আইভি রহমান পরিষদ।হাছান মাহমুদ বলেন, “১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মোশতাক এবং জিয়া। আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারেক রহমান। তারা আসলে হত্যার রাজনীতিটাই করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই জিয়াউর রহমানের উত্থান এবং ক্ষমতায় টিকে থাকাটাও হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছে। তার (জিয়াউর রহমান) বিরুদ্ধে যখনই সেনাবাহিনীতে ক্যুর প্রচেষ্টা হয়েছে, তখনই নির্বিচারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “জিয়াউর রহমান ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার চেষ্টা করেছিল, করতে পারেনি। তার লোকই তাকে হত্যা করেছে। বেগম খালেদা জিয়া সোয়া দুই দফায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেননি। কারণ কী? কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হবে, সেজন্য জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেননি। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকের বিএনপিও সেই হত্যার রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।”

বিএনপির মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ইঙ্গিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “পত্রিকায় দেখলাম চট্টগ্রামে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কখন যে নয়াপল্টনের অফিসে যুবদল তালা লাগিয়ে দেয়, সেটি দেখার বিষয়। তাদের (বিএনপি) ঘরের মধ্যে এখন অন্তর্জ্বালা শুরু হয়েছে। নইলে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগানোর কথা না। এই অন্তর্জ্বালার কারণ হচ্ছে, বিদেশিদের কাছে বারবার ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হয়নি। বিদেশিরা তাদের দাবি-দাওয়া, তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার এগুলোর প্রতি কোনো সমর্থন জানায়নি। বিদেশিরা শুধু একটি সুন্দর নির্বাচন দেখতে চায় বাংলাদেশে। আমরাও (আওয়ামী লীগ) একটি সুন্দর নির্বাচন করতে চাই।”

নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, “নির্বাচন বর্জন করার অধিকার বিএনপির আছে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা যদি কেউ করে, তাহলে দেশের মানুষ কঠোর হস্তে সেটি প্রতিহত করবে। এটি ২০১৪ সাল নয়। এটি ২০২৩ সাল। এখন ২০১৩-১৪ সালের পুনরাবৃত্তি করবেন, সেটি এই দেশের মানুষ করতে দেবে না।”

অনুষ্ঠানে আইভি রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “আইভি রহমান একজন কর্মীবৎসল নেত্রী ছিলেন। তিনি কর্মীদের সঙ্গে উঠতেন, চলতেন, বসতেন। এমন কোনো মিটিং নেই, যেখানে তিনি থাকতেন না। তিনি সৌখিন ছিলেন। যত্নসহকারে স্বামীর খোঁজ-খবর রাখতেন।”

আইভি রহমান পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ডেইজি সারোয়ার প্রমুখ।