কুষ্টিয়ায় নদী ভাঙনে হুমকির মুখে আশ্রায়ন প্রকল্পসহ জনপদ

প্রকাশিত: ৪:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২০

নিউজ ডেস্কঃ এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত। নদীতে পানি নেই। শুষ্ক মৌসুমে যতসামান্য পানি প্রবাহেই তীব্র ভাঙনে চরম বিপন্নের মুখে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার হেলালপুর আশ্রায়ন প্রকল্পসহ জনপদ। পূর্ব থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় এখানে প্রতিরক্ষা গ্রোয়েনও করেছিলো পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেটিও এখন বিপন্নের অপেক্ষায়।স্থানীয় ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতিবছর তীর সংলগ্ন এসকেবি ইটভাটার মাটি কাটার কারণে এই ভাঙনের সৃষ্টি।সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান, তীব্র ভাঙন ঠেকাতে ইতোমধ্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে আক্রান্ত স্পটটি রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা জরুরী মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, সেই সাথে আক্রান্ত স্থান থেকে ইটভাটার মাটি উত্তোলন বন্ধেও উদ্যোগ নেবেন বলে জানান প্রশাসন।খোকসা উপজেলার হেলালপুর সরকারি আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা সুফিয়া খাতুন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে আকস্মিক গড়াই নদীর পাড় ভেঙে আমরা এখন চরম বিপন্নের মুখে। এখানে ৩৫টি পরিবারের সবাই সহায় সম্বলহীন উদ্বাস্ত। প্রতিবছর নদীর ভিতরে এবং সংলগ্ন তীর থেকে ইটভাটার মাটি উত্তোলনের কারণে নীচু হয়ে যাওয়ায় পানি ঢুকে সৃষ্টি হয়েছে এই ভাঙ্ন। এই ভাঙ্ন বন্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে আমরা যে ভাসমান উদ্বাস্ত ছিলাম আবার তাই হয়ে যাবে।

ঘটনাস্থলে জরুরী বালির বস্তা ডাম্পিং কাজ দেখভারের দায়িত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৪ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই ভাঙনে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একদিকে নদীর মাঝখানে চর জেগে পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সেখান থেকে প্রবাহমুখের দিক পরিবর্তন, অন্যদিকে নদীর তীর থেকে মাটি উত্তোলনের ফলে নীচু হয়ে যাওয়ায় পানি ঢুকে এই স্থানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জায়গাটি পূর্ব থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো বলে এখানে একটা গ্রোয়েনও করা হয়েছিলো খোকসা উপজেলা শহর রক্ষায়। সেটাও এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত ভূক্তভোগীদের করা মাটি উত্তোলনের অভিযোগ বিষয়ে এসকেবি ইটভাটার ব্যবস্থাপক গণেশ কুমার বলেন, জমিটি তাদের নিজস্ব মালিকানা সম্পত্তি, সেজন্য এখান থেকে মাটি কেটে উত্তোলন করি।

খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী জেরীন কান্তা বলেন, গড়াই নদীর পার ভেঙে আশ্রায়ন প্রকল্প, খোকসা শহর রক্ষাবাধসহ জনপদ চরম ঝুঁকির মুখে পড়ায় তাৎক্ষনিক ভাঙ্ন ঠেকানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকে যাতে আর কেউ অপরিকল্পিত মাটি খনন বা উত্তোলন করতে না পারে সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া হবে।বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, গড়াই নদীর বাম তীরবর্তী খোকসা উপজেলার হেলালপুর আশ্রায়ন প্রকল্প, শহর রক্ষাবাধসহ গোটা এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা ও জনপদ চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এ মুহুর্তে বালির বস্তা ফেলে তাৎক্ষনিক ভাঙ্ন মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে তবে আগামী বর্ষা মৌসুমে আক্রান্ত এই জায়গাটি রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নচেৎ নদীর মরফোলজিক্যাল চেঞ্জের ফলে ওইখানে নদীর টানির্ং পয়েন্ট জনপদে ঢুকে পড়তে পারে।