মাদ্রাসাছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ৮, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাহাব উদ্দিনের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার সকালে উপজেলার ধানশালিক বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

অপরদিকে, গত ইউপি নির্বাচনে ধানশলিক ইউনিয়নে নৌকার পক্ষে কাজ করার জের ধরে ৪৭ বছর বয়সী আওয়ামী লীগ নেতা আতিক উল্লাহকে ইভটিজার বানিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে চেয়ারম্যান (স্বতন্ত্র) সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে।মানববন্ধনে ধানশালিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, আমার মেয়ে চাপরাশিরহাট এ রব সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে। মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে স্থানীয় সন্ত্রাসী আতিক উল্লাহর নেতৃত্বে বখাটে আকাশ একরাম, দিপু ও টুটুলসহ কয়েকজন আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। তারা নানা ভাবে মেয়েকে হয়রানিসহ বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দেয়। বিষয়টি জানালে আমার ছেলে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসা করতে যায়। এ সময় বখাটেরা ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন টিটুকে জানালে তিনিও আসেন। পরে ওই চেয়ারম্যানের সামনে বখাটেরা কয়েকজন মিলে আমাদের ওপর লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। আমার ছেলেকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং আমি লাঞ্ছিত হই। হামলায় আমার ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক জিহাদ গুরুতর আহত হয়। এ বিষয়ে কবিরহাট থানায় মামলা করেছি।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে হয়রানির শিকার আতিক উল্লাহ বলেন, আমি গত ইউপি নির্বাচনে ধানশালিক ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান ইয়াকুব নবীর পক্ষে কাজ করি। সেই নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র ভোট করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন। নির্বাচনের পর থেকে তিনি আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছেন। আমার একটি মেয়ে বিয়ে দিয়েছি, আরেকটি মেয়ে অনার্সে পড়ে। আমি ৪৭ বছর বয়সে তার ১৪ বছরের মেয়েকে ইভটিজিং করব আপনাদের মনে হয় কিভাবে?

তিনি আরও বলেন, আপনারা এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানেন যে- আমার বিরুদ্ধে এহেন কোনো অভিযোগ আছে কি না। ঘটনার দিন চেয়ারম্যানের ছেলের নেতৃত্বে কয়েকজন কিশোর গ্যাং এর ছেলেরা এসে আমার এলাকার দিপু নামের এক ছেলেকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আটক করলে খবর পেয়ে সেখানে আসেন চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন। তিনি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে উল্টো উস্কানিমূলক আচরণ করায় তাদেরকে অবরুদ্ধ করে এলাকাবাসী। আমি খবর পেয়ে রাত ৯টায় চাপরাশিরহাট বাজার থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এটাই আমার অপরাধ।

মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীকে ইভটিজিং করার বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন মাদ্রাসার পক্ষ থেকে জানতে চাইলে চাপরাশিরহাট এ রব ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এ টি এম ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, আমার মাদ্রাসার ছাত্রীকে ইভটিজিং করেছে আমি নিজেই জানিনা। এ বিষয়ে কোন অভিভাবক আমাকে অবগত করেনি। আমার কাছে জানালে আমি বিষয়টি আইনি ভাবে মোকাবিলা করতাম।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা মানববন্ধন নাকি প্রতিবাদ সভা করতেছে সেই বিষয়ও আমি কিম্বা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিনা। ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছে আমার মাদ্রার ছাত্রী অথচ আমাকে কিছু না জানিয়ে তারা নিজেদের ক্ষমতামতে সবকিছু করতেছে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী আছে কি না জানতে চাইলে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল বলেন, সেখানে আমাদের মাদ্রাসার কেউ ছিল না।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষই স্থানীয় সংসদ সদস্য সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হস্তক্ষেপ ও প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।