রাজশাহীতে বোরো ধান কাটা শুরু, শ্রমিক সংকট চরমে

প্রকাশিত: ১১:৩৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক ; রাজশাহীতে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। শুরুতে বোরো ধান রোপণে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার বাম্পার ফলন হবে এমনটা আশা করছেন চাষিরা। মূলত আগাম জাতের বোরো ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষকরা।

রাজশাহীর ৯টি উপজেলাতেই আগাম জাতের বোরো ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষকরা। বিশেষ করে এবার ঝড়ঝাপটা তেমন না থাকায় আগেই ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান ও খড় ভালো ভাবে শুকিয়ে বাড়িতে তুলতে পারছেন বোরো চাষিরা। আসা করা যাচ্ছে সপ্তাহ দু-এক দিনের মধ্যে সব বোরো ধান কাটা ও মাড়াই করে সুষ্ঠু ভাবে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাচ্ছেন কৃষকেরা। উপজেলার বিভিন্ন বোরো ধানের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বোরো জমির ধান পেকে সোনালী রঙে শোভা ছড়িয়ে দুলছে জমিতে। অন্যদিকে, আলু উত্তোলনের জমিতে লাগানো বোরো ধান সুবজ হয়ে বেড়ে উঠছে। বেশকিছু কৃষক জানান, এখনো বহিরাগত শ্রমিকরা না আসায় এলাকার শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে কৃষকদের।

বহিরাগত শ্রমিকরা না আসায় স্থানীয় শ্রমিকরা নিজেদের ইচ্ছে মতো শ্রমের মূল্য বাড়িয়ে কেউ পাইট হিসেবে কেউ জমি ঠিকা নিয়ে করছেন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। তবে আসা করা যাচ্ছে দু’এক দিনের মধ্যে বহিরাগত শ্রমিকরা চলে আসবে।

এ বছর বোরো ধানের যে পরিমাণ ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা তা দু’পাঁচ বছরেও এমন ফলন পাননি। এ বছর বোরো জমিতে প্রতি বিঘায় সর্বনিম্ন ৩০ থেকে ৩৫ মন করে ফলন হচ্ছে। বাজারে দামও ভালো থাকায় খুশি হলেও আবহাওয়া নিয়ে অনেকটাই সংকিত হয়ে রয়েছে কৃষকরা।

তানোর উপজেলার শিবনদী (বিলকুমারী) বিলের একাবারে নিচে থেকে মাথায় ও বাঁশের ভারে করে ধান নিয়ে এসে তালন্দ বাজার পার হয়ে মূল রাস্তায় পালা দিয়ে রেখেছেন শ্রমিকরা। তারা জানান, ১০ জন শ্রমিক এক সাথে কাজ করছি।

বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ মণ মুজুরীতে ধান কাটা হচ্ছে। যে সব জমি একেবারেই নিচে সেগুলো থেকে ধান বহনে প্রচুর কষ্ট হয়। ওই সব জমিতে বিঘায় ৫ মণ করে নেওয়া হয়। আর রাস্তার ধারের জমি সেগুলোতে ৪ মণ করে নেওয়া হয়।

তারা হরিদেবপুর গ্রামের সঞ্জয়, বিপুল ও উজ্জলসহ কয়েকজন কৃষকের ধান কেটে বহন করছেন। তানোর থানার মোড়ের ধান ব্যবসায়ী সুনিল দাস জানান, ১১শ টাকা মণ ধান বিক্রি হচ্ছে। তবে ধানের দাম আরো বাড়বে। আমাদের উপজেলায় কাচি পাকি দুই ধরনের হিসাব হয়। ২৮ কেজিতে কাচি ১ মণ, বাজার মূল্য ৭০০ টাকা, আর ৩৭ কেজিতে পাকি ১ মণ বাজার মূল্য ১১০০ টাকা।

শ্রমিক সংকট নিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, কেবল ধান কাটা শুরু হয়েছে। এখনই শ্রমিক সংকট বলা যাবে না। কারণ, রাজশাহীর ধান কাটেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকেরা। তাঁরা এখনও আসেননি। এক বিঘা ধান কেটে তো তাঁরা বসে থাকবেন না। সব জমির ধান পাকলে ওই শ্রমিকেরা আসবেন। তখন সংকট বোঝা যাবে না।