দুর্গাপুরে গরুর শরীরে দেখা দিচ্ছে এলএসডি রোগ আতঙ্কে খামারিরা

প্রকাশিত: ৯:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : নেত্রকোনার দুর্গাপুরে গবাদি পশুর ভাইরাস জনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

উপজেলার প্রায় সব গ্রামের গবাদি পশু এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় গরু পালনকারী খামারি ও সাধারণ কৃষকদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ রোগের প্রতিকার পেতে খামারি ও কৃষকগণ ছুটছেন পল্লীচিকিৎসক ও প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে। এরই মধ্যে বেশ কিছু গরু মারা যাওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতার পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ।

এলএসডি রোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগে আক্রান্ত ৩টি গরুকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছে। কয়েকজন কৃষক বলেন, গরুর গায়ে প্রথমে ফোসকা দেখা দিচ্ছে। পরে তা সারা গায়ে ছড়িয়ে ক্ষত দেখা দিচ্ছে। এ রোগ হলে গরু গুলো খাদ্যগ্রহন বন্ধ করে দেয় এবং ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যায়। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে ঔষধ সেবনেও এই রোগ থেকে দ্রুত সেরে উঠছে না আক্রান্ত হওয়া পশু গুলো। গরুর এ রোগ উপজেলার প্রায় সব গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসার অভাবে অনেকের গরু-ছাগল মারাও যাচ্ছে। রোগাক্রান্ত এসব গবাদিপশু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন বিভিন্ন এলাকার খামারী ও কৃষকগন।

সদর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের রমজান আলী বলেন, তাঁর ৮টি গরু আছে তার মধ্যে একটি বাছুর আক্রান্ত হয়েছে এ রোগে। বাছুর নিয়ে প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে আসলে শুধু ব্যবস্থাপত্র লিখে দিচ্ছেন। অপরদিকে মেলাডহর গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি আবিদ হাসান বলেন, তার একটি গাভী এ রোগে আক্রান্ত। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর গাভিটি মারা গেছে। বর্তমানে তার ক্ষুদ্র খামারে ৯টি গরু রয়েছে সে গরু গুলো নিয়ে তিনি চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বড়ইউন্দ গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, তার পাঁচ মাসের বাছুর গত ৮-৯ দিন আগে এ রোগে আক্রান্ত হয়। তিনি প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে এসে ডাক্তারের পরামর্শ মতে চিকিৎসা করাচ্ছেন।

২০১৯ সালে প্রথম বাংলাদেশে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগটি নিশ্চিত হয়। এটি মূলত এক প্রকার ভাইরাস। খুব সহজেই এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। গত এক মাসে ৯০টির বেশি গরু ল্যাম্পিং স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিনিয়তই আক্রান্ত্রের সংখ্যা বেড়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে। বড় গরুর তুলনায় এ রোগে বাছুর আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শিলা রাণী দাস বলেন, এই রোগে গরুর চামড়ার উপরিভাগে সারা শরীরে গোটার সৃষ্টি হয়। মশা ও মাছির কামড়ে এক পশু থেকে আরেক পশুতে ছড়ায়। এর চিকিৎসায় এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো ভ্যাকসিন আসেনি। এই রোগের প্রতিরোধে আপাততঃ আমরা গোট পক্স ভ্যাকসিন দিচ্ছি। প্রতিদিনই দুই-তিনটা আক্রান্ত পশু নিয়ে ভুক্তভোগী কৃষকেরা আমাদের এখানে আসছেন। আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। পাশাপাশি আতঙ্কিত না হয়ারও পরামর্শ পরামর্শ দিচ্ছি।